দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর আগমন, সন্ধ্যায় কালীঘাটে জুনিয়র ডাক্তাররা, রাতে ব্যর্থ বৈঠক এবং সন্দীপ ঘোষদের গ্রেফতার- জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে ঘিরে শনিবার একের পর এক ঘটনা ঘটল। কিন্তু শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হল না। আর তারপর স্বাস্থ্যভবনের সামনে দাঁড়িয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে যুক্ত এক ‘মুখ’ বললেন, ‘শনিবার বিকেল পর্যন্ত আমরা এখানে খানিকটা হলেও দিশেহারা ছিলাম। আজ মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে আসার পরে আমরা হয়তো খানিকটা দিশেহারা ছিলাম। এখান থেকে বেরোনোর আগে কিছুটা দিশেহারা ছিলাম। কিন্তু কালীঘাট থেকে ফিরে এসে দিশা খুঁজে পেয়েছি। প্রমাণ করলাম যে আমরা দিশাহীন হইনি।’
‘প্রাতিষ্ঠানিক মার্ডার, কান টানলে মাথাও আসবে’
'আজ কান এসেছে, কান টানলে মাথাও আসবে'- কালীঘাট থেকে সল্টলেকে স্বাস্থ্যভবনের কাছে ফিরে এসে এমনই হুংকার দিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। শনিবার রাতে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে জুনিয়র ডাক্তাররা যখন ফিরে আসছিলেন, তখনই খবর আসে যে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আর তারপরই 'কান টানলে মাথাও আসবে' বলে হুংকার দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে সেই ‘মাথা’ কে বা কারা, তা নিয়ে নির্দিষ্টভাবে কোনও মন্তব্য করেননি জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের বক্তব্য, সন্দীপদের গ্রেফতারিতে সিলমোহর পড়ে গেল যে স্বাস্থ্যভবন পুরোপুরি দুর্নীতির আখড়া হয়ে উঠেছে।
সল্টলেকের ধরনা মঞ্চ থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে যুক্ত এক ‘মুখ’ বলেন, আমাদের বোনের সঙ্গে হয়েছে, 'সেটা প্রাতিষ্ঠানিক মার্ডার। কোনও একজন ব্যক্তি সেই কাজটা করতে পারেন না। আজ কান এসেছে। কান টানলে মাথাও আসবে। এটা আমাদের বিশ্বাস।' সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, ৩৫ দিন ধরে যে আন্দোলন হচ্ছে, সন্দীপ এবং টালা থানার তৎকালীন ওসির গ্রেফতারির মাধ্যমে সেই লড়াইয়ের ক্ষেত্রে একটা ছোট জয় এল।
‘একটা ভুল চালের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে’
অপর এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘আমাদের এই আন্দোলনকে প্রথমদিন থেকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চলেছে।’ সেইসঙ্গে তিনি দাবি করেন, শনিবার সকাল পর্যন্ত অনেকে অভিযোগ করেছে যে এখানে যারা দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মধ্যে স্বচ্ছতার অভাব আছে। অনেকের সঙ্গে রাজনৈতিক যোগ আছে। শনিবার তাঁরা প্রতিটি কথার জবাব দিয়ে এসেছেন বলে দাবি করেন ওই জুনিয়র ডাক্তার।
সেইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন যে খারাপ মতলব নিয়ে অনেকে জুনিয়র ডাক্তারদের ধরনা মঞ্চে আসছেন। ‘অদ্ভূত-অদ্ভূত লোকেরা’ এসে কথা বলে যাচ্ছেন। পাশ থেকে ছবি তোলার চেষ্টা করছেন। একটা ভুল চালের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
‘মহিষাসুর বধ দিয়ে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে’
সন্দীপ এবং অভিজিতের গ্রেফতারির ঘটনাকে ‘মহিষাসুরের বধ’ বলেও দাবি করেন জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে যুক্ত এক ‘মুখ’। তিনি দাবি করেন, ‘মহিষাসুর বধ দিয়ে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে।’ আগামিদিনে আরও বড়-বড় নাম সামনে আসবে বলে তিনি আশাপ্রকাশ করছেন। সেইসঙ্গে তাঁর দাবি, ভবিষ্যতে জুনিয়র ডাক্তারদের সামনে আরও বড় কাজ আছে।