মাত্র ৫০০ টাকায় হবে করোনা পরীক্ষা। সংক্রমণ চিহ্নিত করার সস্তা এই কিট বানিয়ে ফেলল কলকাতারই একটি জৈবপ্রযুক্তি সংস্থা। এই কিটে মাত্র ৯৫ মিনিটে নমুনায় শনাক্ত করা যাবে করোনা। জিসিসি বায়োটেক নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বখরাহাটের এই সংস্থার কর্ণধার রাজা মজুমদার জানিয়েছেন, ভারতে রোজ ৩ লক্ষ পরীক্ষা হলেও পর্যাপ্ত কিট সরবরাহ করতে পারবেন তাঁরা। পরীক্ষার জন্য রবিবার সংস্থার কাছ থেকে ১০০০ কিট চেয়ে পাঠিয়েছে WHO. ইতিমধ্যে এই কিটকে স্বীকৃতি দিয়েছে ICMR. পশ্চিমবঙ্গের এই গবেষণা ভারতে করোনা শনাক্তকরণ ও মোবাকিলায় বিশেষ ভূমিকা নেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
মূলত করোনা পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা থেকে ভাইরাসের আরএনএ নিষ্ক্রমণ ও তা পর্যবেক্ষণযোগ্য করে তুলতে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হয়। প্রতিটি ধাপে দরকার হয় বিশেষ সব রাসায়নিক। সেই সব রাসায়নিককে একসঙ্গে মিশিয়ে একটি QRT PCR মিশ্রণ তৈরি করেছেন GCC বায়োটেক। যার ফলে অনেক দ্রুত চিহ্নিত করা যাচ্ছে ভাইরাসের উপস্থিতি। এই মিশ্রণ তৈরি যাবতীয় রাসায়নিক নিজেদের গবেষণাগারেই তৈরি করে সংস্থাটি। যার ফলে খরচ পড়েছে অনেক কম।
সংস্থার কর্ণধার রাজা মজুমদার জানিয়েছেন, এই কিট এক দিন আগে আক্রান্ত করোনা রোগীকেও চিহ্নিত করতে পারবে। আর তাও কয়েক ঘণ্টায়। সঙ্গে তাঁর দাবি, এই কিট তৈরি হয়েছে সম্পূর্ণ দেশিয় প্রযুক্তিতে। সমস্ত রাসায়নিক তৈরি করেছে সংস্থার গবেষকদল।
রাজা বাবু জানিয়েছেন, দেশের নামকরা সব গবেষণাগারে রাসায়নিক সরবরাহ করে তাঁদের সংস্থা। ফলে মাসে ১ কোটি পরীক্ষা হলেও রাসায়নিক সরবরাহ করার ক্ষমতা রয়েছে তাদের।
বলে রাখি, বর্তমানে এক একটি করোনা পরীক্ষার খরচ ৪,৫০০ টাকায় বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। সেই তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে তৈরি কিট দিয়ে পরীক্ষায় খরচ হবে মাত্র ৫০০ টাকা। তাছাড়া বর্তমান RT-PCR পদ্ধতিতে কোনও ব্যক্তি করোনায় সংক্রমিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা করলে তা ধরা পড়ে না। কয়েক দিন পর ভাইরাস দেহে সক্রিয় হলে তখন নমুনায় তার খোঁজ মেলে। কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে দেহে ভাইরাস ঢুকলেই শনাক্ত করা যাবে তাকে। ফলে কোনও ব্যক্তি করোনা রোগীর সংস্পর্শে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জেনে ফেলা সম্ভব যে করোনা তাঁর শরীরে প্রবেশ করেছে কি না।
সংবাদসংস্থা ANI-কে রাজা মজুমদার জানিয়েছেন, ২ মাসের গবেষণার পর গত ১ মে আমরা আইসিএমআর-এর স্বীকৃতি পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমরা ১ কোটি টেস্ট কিট তৈরি করেছি। আরও ৪০ লক্ষ কিট মজুত রয়েছে। দেশের প্রতিদিন ৩ লক্ষ করোনা পরীক্ষা হলেও আমরা সরকারকে সাহায্য করতে পারব।