তিন বছর গা–ঢাকা দিয়ে থাকার পর বুধবার পুজোর মধ্যে কলকাতায় হাজির হন বিমল গুরুং। ঘোষণা করেন, বিজেপি–র সঙ্গ ত্যাগ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সঙ্গে জোট করতে চান তিনি। আর তার ঠিক পরের দিনই এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, ছত্রধর মাহাতোর মতো বিমল গুরুংকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছত্রছায়ার মধ্যে আসতে হল। দিলীপ ঘোষের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করলেই সব কিছু থেকে ছাড় মেলে।
টুইটে এদিন দিলীপ ঘোষ লিখেছেন, ‘এত বছর পাহাড় থেকে পালিয়ে বেরিয়েছেন বিমল গুরুং। কিন্তু পাহাড়েই ফিরতে চেয়েছেন তিনি। তাই আত্মসমর্পণ করলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আত্মসমর্পণ করলে যে কেউ সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে পারে। যেমন ছত্রধর মাহাতো এখন স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’
রাষ্ট্রদ্রোহিতা, পুলিশকে খুনের অভিযোগ–সহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতা বিমল গুরুং। সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন দিলীপ ঘোষ টুইটে বলেছেন, ‘এখন শুধু এটাই দেখার অপেক্ষা যে বিমল গুরুংয়ের বিরুদ্ধে যে সব মামলা রয়েছে সেগুলির কী হয়।’ তাঁর মতে, ‘পশ্চিমবঙ্গ এক অদ্ভুত রাজ্য, এখানে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণ করলে সব কিছুতেই ছাড় মেলে।’

এদিকে, বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, গা–ঢাকা দিয়ে থাকতে বেশ সমস্যাই হচ্ছিল গুরুংয়ের। পাহাড়ে এভাবে থাকাটা আরও বেশি ঝুঁকির। তাই মাস তিনেক আগে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয় তৃণমূলের। দিল্লিতে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রশান্ত কিশোর। শিলিগুড়িতে প্রশান্ত কিশোর ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন গুরুংপন্থীরা। তাঁরা জানান তাঁদের নেতা তৃণমূলে ফিরতে চান।
২০১৯–এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের প্রায় সব আসন থেকেই দখল হারিয়েছে তৃণমূল। পরের বছরই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। আর তাতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে মরিয়া শাসকদল। সেই পথ মসৃণ করতেই কি বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে তৃণমূলের এই চুক্তি? যদিও এর কোনও সদুত্তর মেলেনি। যদিও কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠকে গুরুং ঘোষণা করেন, ‘আমি কেন্দ্রে এনডিএ–র শরিক। কিন্তু আজ এই মুহূর্ত থেকে এনডিএ ছাড়ছি।’