২০২১–এর লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে একইদিনে বিজেপি–র ২ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মুখোমুখি রাজ্যের ২ নেতৃত্ব। দিল্লিতে বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সামনে বসলেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিকে, দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক করতে কলকাতায় এলেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। আর এ নিয়েই বেশ সরগরম ছিল রবিবারের রাজনীতি–বাজার।
কিন্তু বিজেপি–র হঠাৎ এত তৎপরতা কেন? ঘটনার সূত্রপাত সপ্তাহ দুয়েক আগে। এক সাংবাদিক বৈঠকে দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, ২০২১–এ বাংলায় বিজেপি–কে তিনি একাই ক্ষমতায় আনতে পারবেন। বলেন, ‘যাঁরা বিশ্বাস করেন না, তাঁরা ঘরে বসে থাকুন।’ নাম না করে এমন মন্তব্যে বিজেপি–র অন্দরে অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। সরাসরি অভিযোগ যায় কেন্দ্রে। এর পরই দিলীপ ঘোষকে ডেকে পাঠান জে পি নাড্ডা। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিনের প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠকে দিলীপ ঘোষকে বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, ‘একার জোরে করছি বলবেন না, তাতে অন্যরা ব্যথিত হতে পারেন। সবাইকে নিয়ে চলতে হবে।’
এদিকে, রবিবারই দলের সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। জানা গিয়েছে, মুকুল রায়ের সল্টলেকের বাড়িতে এদিন মূলত আদামীদিনে নির্বাচনী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন রাজ্য বিজেপি–র ২ শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, হিন্দুত্বকে সামনে রেখেই আগামী নির্বাচনে লড়বে বিজেপি। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের কিছু হিন্দুবাদী নেতাকে দলে আনা হতে পারে। দলের ভেতরেও কিছু পদ পরিবর্তন করা হতে পারে। এ নিয়ে এদিন বিস্তর আলোচনা করেছেন তাঁরা।
পরপর এই বৈঠকের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি–র এক সহ সভাপতি নিজের নাম গোপন রেখে বলেন, ‘দল নিয়ে তিনি যে অখুশি, এই ব্যাপারটি শেষ বার দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতা শিবপ্রকাশকে জানিয়েছেন মুকুল রায়। দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর অম্লমধুর সম্পর্কের কথা সবারই জানা। মুকুল রায় মনে করেন, ২০২১ সালের নির্বাচন পরিচালনা এবং প্রার্থী বাছাই করার জন্য তাঁকে আরও স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। যদিও আমাদের সংগঠনে এ ধরণের সিদ্ধান্ত মূলত রাজ্য সভাপতি নিয়ে থাকেন।’
দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ আরেক সহ সভাপতি জানান, এ বছর মার্চে আসার কথা থাকলেও লকডাউনের জেরে পশ্চিমবঙ্গে আসতে পারেননি কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনি টানা ৩ দিন এখানে থেকে বিভিন্ন স্তরের বৈঠক করবেন। বোঝাই যাচ্ছে, আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের শাসক দলকে এতটুকু জমি ছাড়তে নারাজ গেরুয়াশিবির। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই সাংগঠনিকভাবে নিজেদের গুটি সাজিয়ে নিচ্ছেন বিজেপি নেতারা।