সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। গত সোমবার, ১৯ অক্টোবর ছুটি দিয়েছে হাসপাতাল। আপাতত বাড়িতেই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো সম্পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন। তারই মধ্যে রবিবার, মহানবমীর সকালে ফেসবুকের মাধ্যমে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে দিলেন বিজেপি–র সর্বভারতীয় সম্পাদক অনুপম হাজরা। ২০২১–এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের দিকে লক্ষ্য রেখে দলের কার্যকর্তাদের আরও ‘সংযত’ হতে বললেন অনুপম। না হলে, ‘অন্য কোনও রাজ্যে’ বঙ্গ বিজেপি–কে ‘বাসস্থান খুঁজতে হবে’ বলে তাঁর অভিমত।
এদিন অনুপম দাবি করেছেন যে ২০২১–এ হেরে গেলে তৃণমূল দলেরই আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। তাঁর কথায়, ‘আমাদের কাছে ২০২১–এর লড়াইয়ের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের রাজ্য অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ জয় করে আমাদের প্রিয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিশেষ উপহার দেওয়া। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য লড়াইটা হচ্ছে রাজনৈতিক অস্তিত্বের। কারণ, ২০২১–এ হেরে গেলে তৃণমূল দলেরই আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। পার্টিটা উঠে যাবে। আর সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব ভাল করেই জানেন। আর তাই হয়তো মরণ কামড় দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন।’
নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নেওয়ার আবেদন জানিয়ে দলের নেতাকর্মীদের জন্য অনুপমের বার্তা, ‘আমরা তো ক্ষমতায় আসছিই— এই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস নিয়ে যাঁরা নিজেদের মধ্যেই দ্বন্দ্ব, বিবাদ শুরু করে দিয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশে বলি, সেই সব দ্বন্দ্ব, বিবাদ, ঝগড়া মিটিয়ে নিয়ে নিজেদের মধ্যে একতা বজায় রাখলেই ভাল। তাতে আমাদের বুথস্তরের কার্যকর্তারাও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই মনোবল পাবেন।’
বিজেপি–র মধ্যে যে অন্তর্কলহ রয়েছে, সে কথা এদিন প্রকাশ্যে জানিয়ে প্রাক্তন সাংসদ অনুপম হাজরা দলের অন্দরে নতুন করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে তা বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু তার নিশানা ঠিক কারা তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে। তিনি এদিন দলের নেতাকর্মীদের সাবধান করে বলেছেন, ‘আমরা যদি এই লড়াইয়ে কোনওভাবে হেরে যাই, তা হলে তৃণমূলের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য, বাংলার বাইরে, অন্য কোনও রাজ্যে আমাদের নতুন বাসস্থান খুঁজতে হবে। আর সব থেকে দুরবস্থা হবে বুথস্তরের কার্যকর্তাদের। যাঁরা এই লড়াইয়ে আমাদের প্রধান সৈনিক। যাঁরা নিজেদের প্রাণ পর্যন্ত দিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সারা বছর লড়ে যাচ্ছেন।’
তাই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি–র ভবিষ্যতের কথা ভেবে এদিন দলের কর্মীদের সংযত হওয়ার বার্তা দিয়েছেন অনুপম। বারবার এই একটিই আবেদন এদিন করে গিয়েছেন তিনি— নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব, বিবাদ, লড়াই বন্ধ করুন।