পিতা–পুত্র ভবিষ্যতে একই ছাতার তলায় থাকবেন কিনা সেই সম্ভাবনা কিছুটা হলেও নিশ্চিত হল।
পশ্চিমবঙ্গে গেরুয়া শিবিরের রাজনীতিতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গা পাচ্ছেন না বিজেপি–র জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায় ও তাঁর পুত্র শুভ্রাংশু। বহুদিন ধরে ব্রাত্য থাকার দরুণ তাঁরা পুরনো দল তৃণমূলে ফিরবেন কিনা তা নিয়ে এর মধ্যেই জল্পনা তীব্র হয়। আর তাতে ইন্ধন জোগান তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
কিন্তু শনিবার স্বাধীনতা দিবস ও সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে মকুলু ও শুভ্রাংশু দু’জনেই তাঁদের বর্তমান অবস্থানের কথা পরিষ্কার করে জানিয়ে দিলেন। পাশাপাশি তৃণমূলের সঙ্গে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর সম্পর্কের ঘাটতির কথা মনে করিয়ে নতুন জল্পনা শুরু করলেন মুকুল রায়।
টানা তিন দিন পশ্চিমবঙ্গে থেকে দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতে এসেছেন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক তথা দলের পশ্চিমবঙ্গের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। রবিবার রাজ্যে এসেই প্রথমে চলে যান সল্টলেকে মুকুল রায়ের বাড়িতে। পরের দিন সোমবারই বিজেপি–র সাংগঠনিক বৈঠকে বেশ সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায় মুকুল রায়কে। বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বিজেপি–তেই থাকার কথা আরেকবার পরিষ্কার জানিয়ে দেন।
এর পরই সেই প্রশ্নটি ছুঁড়ে দেন এক সাংবাদিক— শুভেন্দু অধিকারী কি বিজেপি–তে আসছেন? মুকুল রায় বলেন, ‘এই প্রশ্ন যদি আপনারা শুভেন্দুকে করতেন তা হলে সব থেকে ভাল হত।’ এর পরই তিনি হালকা চালে বলেন, ‘শুভেন্দুর নামে এলাকায় পোস্টার পড়েছে। তাঁকে তৃণমূল নেতা নয়, সমাজসেবী হিসেবে দেখানো হয়েছে। দেখানো হয়েছে বাংলার মুক্তিসূর্য হিসেবে, গরিবের ত্রাতা হিসেবে।’
বাবা মুকুল রায়ের পথ অনুসরণ করেই অনেক টালবাহানার পর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি–তে গিয়েছিলেন শুভ্রাংশু রায়। নতুন দলে তাঁর জায়গা নিয়ে তিনি এখনও সন্দিহান। তাই শুভ্রাংশু ফের তৃণমূলে ফিরবেন কিনা এই নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। কিন্তু শনিবার ৭৪তম স্বাধীনতা দিবসের দিন কাঁচরাপাড়ায় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি ভারতমাতার পুজোর আয়োজন করে নিজের রাজনৈতিক অবস্থানের কথা পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন শুভ্রাংশু।
তিনি বলেন, ‘শাসকদল তৃণমূলের অপশাসনে পশ্চিমবঙ্গে পুলিশ–প্রশাসন দলদাসে পরিণত হয়েছে। উন্নয়নের কাজ থমকে গিয়েছে। এই প্রশাসনের হাত থেকে রাজ্যবাসীকে মুক্ত করতেই ভারতমাতার পুজোর আয়োজন। এই অপশাসনের অবসান ঘটিয়ে ফের বাংলকে উন্নয়নের পথ দেখাব আমরা।’