একে একে আসানসোলের পুর প্রশাসকের পদ, তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতির পদ ছেড়ে দলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করেছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। ততদিনে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি–তে যোগদান স্পষ্ট। তাই অনেকেই মনে করেছিলেন যে গেরুয়া শিবিরে আসতে চলেছেন জিতেন্দ্র। কিন্তু তার আগেই এর বিরোধিতা শুরু হয়ে পদ্মফুল শিবিরে। আর সেই বিরোধিতা করেই সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে বিপাকে পড়লেন বঙ্গ বিজেপি–র অন্যতম নেতা সায়ন্তন বসু।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপি–র তরফে সায়ন্তনকে শোকজ করা হয়েছে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ তাঁকে চিঠি দিয়ে ৭ দিনের মধ্যে জবাব তলব করেছেন। কিন্তু কী বলেছিলেন সায়ন্তন? জিতেন্দ্র তিওয়ারি দলবদল করে বিজেপি–তে আসতে পারেন। এমন জল্পনা ছড়িয়ে পড়তেই এর বিরোধিতা করতে শুরু করেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়, বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পালরা। একইসঙ্গে সুর চড়ান সায়ন্তন বসুও। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার গন্ডি পার করে সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষ্কার বলেন, ‘জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে দলে নেওয়া ঠিক হবে না। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব।’
আর এই কথা বলার জন্য সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে টেনে আনার কারণেই ক্ষুব্ধ হয় রাজ্য নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, এই বক্তব্যের জেরেই সায়ন্তন বসুকে শোকজের চিঠি পাঠান দিলীপ ঘোষ। যদিও যাঁকে নিয়ে এত সমস্যা সেই জিতেন্দ্র তিওয়ারি কিন্তু তৃণমূলেই রয়েছেন। আর এদিকে বিতর্কিত মন্তব্য করে ঝক্কি পোহাতে হল সায়ন্তন বসুকে। যদিও জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন সায়ন্তন।
এই একই কারণে শোকজ করা হয়েছে বিজেপি–র আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মাকে। শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় অনেকের সঙ্গে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি–তে যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ দশরথ তিরকে, জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি বাপ্পা মজুমদার, আশিস দত্ত প্রমুখ। আর এই যোগদানের পরই গঙ্গাপ্রসাদ বলেছিলেন, ‘জেলায় এখন দলে কোনও খালি পদ নেই। যাঁরা দলে এলেন তাঁদের পদ দেওয়া যাবে না।’ আর তাঁর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই শোকজ করে সাতদিনের মধ্যে জবাব চাওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।