রাজ্য বাজেটকে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা বলে উল্লেখ করে একযোগে তোপ দাগল কংগ্রেস ও সিপিএম। বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের মন জয় করার ব্যর্থ চেষ্টা এই বাজেট, মন্তব্য করলেন সিপিএমের পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। একই সঙ্গে বাজেটে যে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে তার পিছনে অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে বলে দাবি তাঁর।
সোমবার অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর বাজেট পেশের পর বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠকে সরকারকে তুলোধোনা করেন বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী। দুজনেই রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন।
আবদুল মান্নান বলেন, সমস্ত বিষয়ে অসত্য তথ্য পরিবেশ করেছে সরকার। মানুষকে বোকা বানাতে এরাজ করেছে তারা। রাজ্য সরকার যে মেডিক্যাল কলেজ তৈরির কথা বলছে সেখানে হাসপাতাল আগে থেকেই ছিল। মাল্টি সুপার হাসপাতালের নামে যেগুলো তৈরি হয়েছে তার অধিকাংশ জায়গায় সিটি স্ক্যান, MRI এর সুবিধা নেই। তাহলে কি শুধু নীল-সাদা রং করলেই মানুষের রোগ সেরে যায়?
সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন সুজনবাবুও। তিনি বলেন, বাজেটে ৮০,০০০ কোটি টাকা ঋণ করার প্রস্তাব করেছে সরকার। তার মধ্যে ৪৫,০০০ কোটি টাকা ঋণ শোধ করতে হয় সরকারকে। বাকি ৩৫,০০০ কোটি টাকা কি খেলা-মেলা খাতে যাবে। কেন রাজ্য সরকার এই বাড়তি ঋণের প্রস্তাব করল তার জবাবদিহি চেয়েছেন তিনি। তিনি বলেন বিধানসভা নির্বাচনের আগে অসৎ উদ্দেশ্যে এই টাকা ধার নিতে চলেছে রাজ্য।
একই সঙ্গে তৃণমূল সরকারের ঋণ নেওয়ার খতিয়ান তুলে ধরেন তিনি। বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ঋণের পরিমাণ ছিল ১.৯২ লক্ষ কোটি টাকা। তৃণমূলের ৮ বছরের শাসনে তা প্রায় ২৫০ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৪.৭৪ লক্ষ কোটি টাকা।
সুজনবাবুর কটাক্ষ, সরকার চলছে মদ বিক্রির টাকায়। সঙ্গে রয়েছে মানুষের কাছ থেকে আদায় করা ট্র্যাফিক ফাইন ও বিদ্যুতের দাম। সরকারের এছাড়া আয়ের কোনও উৎস নেই বলে দাবি করেন তিনি।
তাঁর প্রশ্ন, রাজ্য সরকার তপশিলিদের জন্য মাসে ১০০০ টাকা করে পেনশন ঘোষণা করেছে ভাল কথা। কিন্তু ইতিমধ্যে যাঁরা ৭৫০ টাকা করে পেনশন পান সেটা বাড়ানো হল না কেন? পেনশনের নামে ফের একটা কেলেঙ্কারি হতে চলেছে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
বলে রাখি, সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ২০২০- ২০২১ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাতে রাজ্যবাসীর জন্য একাধিক জনমুখী প্রকল্প ঘোষণা করেছেন তিনি।