এই মুহূর্তে মুখ্যসচিবকে ছাড়তে পারবে না পশ্চিমবঙ্গ সরকার। আর তাই আলাপন বন্দ্যোরাধ্যায়কে ছাড়া হচ্ছে না। এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পাঁচ পাতার এক দীর্ঘ চিঠিতে এই কথা জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি চিঠিতে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের একাধিক ‘ভুল’-এর কথা উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
আলাপনের বদলি সংক্রান্ত নির্দেশ কেন্দ্রকে ফিরিয়ে নেওয়ার আর্জি জানান মমতা। দাবি, অনুরোধ, সমালোচনা মিলি মিশিয়ে লেখা এই পাঁচ পাতার চিঠিতে মমতা জানান, কেন এই মুহূর্তে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মমতার আবেদন, বাংলার মানুষের স্বার্থে যাতে আলাপনকে আরও তিনমাস মুখ্যসচিব পদে থাকতে দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে যাতে প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজে হস্তক্ষেপ করেন, সেই অনুরোধও করেছেন মমতা।
চিঠিতে মমতা লেখেন, নির্বাচন চলাকালীন সময় থেকে রাজ্যে করোনা মোকাবিলার কাজ একা হাতে সামলেছেন মুখ্যসচিব। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতেই আরও তিন মাস মুখ্যসচিবের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদন জানায় রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, গত ২৪ মে রাজ্যকে অনুমতি দেওয়ার পর কী এমন হল যে, ২৮ মে সেই অনুমতি প্রত্যাহার করতে হল। চিঠিতে তিনি আরও লেখেন, আপনার বৈঠকে আপনার দলের স্থানীয় বিধায়ককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমার দীর্ঘ ৪০ বছরের অভিজ্ঞতায় যতদূর জানি মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে তাঁর থাকার কোনও এক্তিয়ার নেই।
এর আগে কেন্দ্রের এই পদক্ষেপকে প্রতিহিংসামূলক আখ্যা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের বহু নেতাও এই বদলির সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে তোপ দাগেন মোদী-শাহের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের সরকারকে। তাদের প্রশ্ন, হঠাৎ মুখ্যসচিবকে সরে যেতে হবে, এটা কে এবং কেন ঠিক করল? রাজ্যের সঙ্গে কেউ কি কোনও আলোচনা করেছিল এই প্রসঙ্গে?
উল্লেখ্য, আলাপনের বদলির নির্দেশ কলাইকুণ্ডার বৈঠকের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার কলাইকুণ্ডা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডাকা ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি পর্যালোচনা বৈঠকে হাজির থাকার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু মোদীর সঙ্গে দেখা করলেও দুই জনের কেউই বৈঠকে যোগ দেননি। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চিঠি আসে। চিঠিতে বলা হয়, আলাপন যাতে সোমবার সকাল ১০টায় দিল্লিতে নর্থ ব্লকের কর্মী ও প্রশিক্ষণ বিভাগে হাজিরা দেন।