নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিবস উপলক্ষে যুযুধান বিজেপি–তৃণমূল। কে কত বড় সুভাষ–ভক্ত তা প্রমাণ করতে ভোটের আগে মুখোমুখি দুই প্রতিদ্বন্দ্বী— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদী। যদিও শনিবার নাম না করে প্রথমেই রেড রোডের অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। মুসলিম–বিদ্বেষী দল হিসেবে ‘বদনাম’ রয়েছে বিজেপি–র। নেতাজি সব ধর্মকে নিয়ে চলতে ভালবাসতেন— এই কথা মনে করিয়ে বিজেপি–কেই এদিন আক্রমণ করেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, ‘আমরা সুভাষজি হিন্দিতে বলি। বাংলায় আমরা বলি নেতাজি সুভাষ। সব ভাষাতেই নেতাজি সুভাষ গ্রহণীয়। নেতাজি মানেই সবাইকে নিয়ে চলা, সংহতি, সম্প্রীতি। সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা নেতাজি বারবার বলতেন। তিনি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি তৈরি করেছিলেন। সেই ফৌজে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, তামিল, গুজরাটি সকলে ছিল। সবাইকে নিয়ে তিনি বাহিনী গড়েছিলেন। কারণ তাঁর ভাবধারাই ছিল যে, আমি ভারতের জন্য লড়ছি। দেশের জন্য লড়ছি। তাই সবাইকে নিয়ে চলতে হয়। বিভেদ করে কিছু হয় না। ডিভাইড অ্যান্ড রুল করে কিছু হয় না।’
প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে এদিন নেতা কেমন হওয়া উচিত সেই সংজ্ঞা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজি, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ কখনও বলেনি দেশটা টুকরো করে দেও। আমরা বলি সুভাষবাদ, গান্ধীবাদ জিন্দাবাদ। সে–ই মহান হয় যে সারা দেশকে নিয়ে চলে। নেতা কেমন হওয়া দরকার? যিনি সবার কাছে গ্রহণীয়। লিডার মাস্ট লিড দ্য পিপল। নেতারা হন সবার কাছে বরণীয়। নেতা মানেই নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, দেশনায়ক।’
কেন্দ্রকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা আজাদ হিন্দ বাহিনী মনুমেন্ট তৈরি করব বাংলায়। দেখিয়ে দেব, কী করে নেতাজি–বন্দনা করা যায়। কিন্তু আপনারা ১৪ হাজার কোটি টাকা দিয়ে নতুন করে সংসদ ভবন তৈরি করছেন। এখনই এটার প্রয়োজন ছিল না। হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে প্লেন কিনছেন। দরকার ছিল না এখনই। কিন্তু একবারও বললেন না যে আজাদ হিন্দ ফৌজের নামে একটা মনুমেন্ট হওয়া উচিত।’ এর পাশাপাশি এদিন সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে জাতীয় ছুটির দিবস ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, ‘নেতাজির জন্মদিন জানি। কিন্তু জানি না তিনি কীভাবে মারা গেলেন। এই কথা প্রকাশ্যে আসা উচিত।’