হাওড়ার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার নবান্নে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে দরকারে হাওড়ায় সশস্ত্র পুলিশ নামানোর নির্দেশ দিলেন তিনি। গত ১০ এপ্রিল কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় লকডাউন ঠিকমতো মানা হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছিল। তখন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেছিলেন, ‘লকডাউন ঠিক মতো চলছে। যে যার মতো করে লকডাউন পালন করছে।’ এমনকী লকডাউনে পুলিশকে কড়াকড়ির নামে বাড়াবাড়ি না করতে পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। বিরোধীদের দাবি, পুলিশের হাত পা বেঁধে দেওয়াতেই হাওড়ায় বাড়াবাড়ি হয়েছে করোনার।
শুক্রবার নবান্নে হাওড়ার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হাওড়ার অবস্থা খুন সেন্সেটিভ। কড়া পদক্ষেপ করুন। মেলামেশা, রাস্তায় বেরনো বন্ধ করে দিন। দরকার হলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবার দিয়ে আসবে পুলিশ।’
মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, রাজ্যের ২টি জায়গা থেকে সব থেকে বেশি করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে। উত্তর কলকাতা ও হাওড়া। মুখ্যমন্ত্রীর আশঙ্কা, ‘হাওড়ায় এখনো করোনার সংক্রমণ পরিবারের মধ্যে সীমিত রয়েছে। তবে তা যে কোনও সময় গোষ্ঠী সংক্রমণের আকার নিতে পারে।’
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, ‘দরকারে সশস্ত্র পুলিশ নামান। কিন্তু বাজারে এক জায়গায় যেন ৫ জনের বেশি দাঁড়াতে না পারে। ১৪ দিনের মধ্যে হাওড়াকে অরেঞ্জ জোনে আনতে হবে। হাওড়া থেকে যেন আর একটা কেসও না আসে।‘
এদিন কলকাতা-সহ রাজ্যের অন্যান্য 'রেড জোন'-গুলিতেও সশস্ত্র পুলিশ নামাতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর সশস্ত্র পুলিশ নামানোর নির্দেশকে কটাক্ষ করেছেন বিধানসভায় বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘লকডাউন কার্যকর করতে প্রথম থেকে সঠিক পথেই এগোচ্ছিল পুলিশ। কিন্তু তাতে নিজের জনপ্রিয়তা কমতে পারে এই আশঙ্কায় পুলিশের হাত পা বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এখন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পুলিশকে পুরনো মোডে ফিরতে বলছেন তিনি।’ সুজনবাবুর অভিযোগ, ‘করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা না লুকিয়ে প্রথম থেকে কেরলের মতো বিজ্ঞানসম্মত পথে র্যাপিড টেস্ট করলে হাওড়া-সহ গোটা রাজ্যে করোনার প্রকোপ এড়ানো সম্ভব হত।’