সরকারি স্কুলের ছেলেমেয়েরা এখন ইউনিফর্ম পেয়ে থাকে। সবুজসাথীর সাইকেল থেকে মিড–ডে মিল এখন সবই পায় বাংলার পড়ুয়ারা। কিন্তু এই পড়ুয়াদের স্কুল ইউনিফর্ম তৈরি করতে রাজ্য সরকারের বিপুল খরচ হচ্ছিল। তবে রাজ্য সরকারের সুচিন্তিত সিদ্ধান্তের জেরে স্কুল পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম তৈরির খরচ এক ধাক্কায় কমে গেল অনেকটাই। একই সঙ্গে তৈরি হয়েছে বহু কর্মসংস্থানের সুযোগ। গোটা বিষয়টিই সম্ভব হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টায়।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে স্কুল ইউনিফর্ম তৈরির মধ্যস্থতাকারীদের সরিয়ে দেওয়া হল। তাতে দাম কমে গেল পড়ুয়াদের ইউনিফর্মের। আর সেখানে এই কাজের জন্য বাংলার মা–বোনেদের সরাসরি যুক্ত করা হল। তার জেরে বিপুল কর্মসংস্থান ঘটল। এভাবেই এক ঢিলে দুই পাখি মারলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২২ সালে এই ইউনিফর্ম তৈরির খরচ হয়েছিল ৮৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়ায় ৮২০ কোটিতে। সেই জায়গায় আগামী ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এই খাতে ৭৬০ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। কিন্তু পোশাকের সংখ্যা বা গুণমান কমছে না। বরং ইউনিফর্ম তৈরির কাপড়ের গুণমান অনেকটাই বেড়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
কতজন পড়ুয়া ইউনিফর্ম পান? প্রত্যেক বছর রাজ্যের প্রায় ১.১৫ কোটি পড়ুয়াকে দু’টি করে ইউনিফর্ম দেয় রাজ্য সরকার। আগে এই পোশাকের জন্য রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলির উপর নির্ভর করতে হতো। এখন চিত্রটা বদলে গিয়েছে। ২০২১ সালে রাজ্যের গৃহীত নীতির ভিত্তিতে বসেছে অত্যাধুনিক তাঁত মেশিন। সেখানে উৎপাদিত কাপড়ে ইউনিফর্ম তৈরি করছেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। ফলে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। পোশাক তৈরির ক্ষেত্রে স্বনির্ভর হয়েছে রাজ্য। ফলে এখন খুশি বাংলার মা–বোনেরা।
আর কী জানা যাচ্ছে? নবান্ন সূত্রে খবর, ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের অধীনে থাকা ডিরেক্টরেট অব টেক্সটাইলের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ইউনিফর্ম তৈরির খরচ কমে দাঁড়াবে ৭৬০.৪৮ কোটি টাকায়। এই বাজেট এস্টিমেট পাঠানো হয়েছে ক্ষুদ্রশিল্প দফতরের প্রধান সচিব রাজেশ পাণ্ডেকে। কেন্দ্রের কাছে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা এবং অন্যান্য খাতে রাজ্যের মোট বকেয়া ১.১৫ লক্ষ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে বুধবার নবান্ন সভাঘরের বৈঠকে নিজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং অপ্রয়োজনীয় ব্যয় সংকোচনে জোর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মাত্র দু’বছরে এই কাপড়ের অধিকাংশই রাজ্যে উৎপাদনের পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। আগামী এক বছরে বাকিটা হয়ে যাবে। ফলে এই খাতে খরচ আরও কমবে।