চিকিৎসায় গাফিলতিতেই মুকুন্দপুরের আমরি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল আড়াই বছরের ছোট্ট ঐত্রীর। মৃত্যুর আড়াই বছর পর চূড়ান্ত রায়ে একথা জানাল পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য কমিশন। ফুটফুটে শিশুটির মৃত্যু নিয়ে শোরগোল পড়েছিল গোটা রাজ্যজুড়ে। লাখ লাখ টাকা খরচ করেও কেন বেসরকারি হাসপাতালে এমন গাফিলতি হবে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলের চিকিৎসকদেরই একাংশ। যদিও কোনও দিনই অভিযোগ মানতে চায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্বাস্থ্য কমিশনের চূড়ান্ত রায়ে জানানো হয়েছে গোটা ঘটনায় হাসপাতালের গাফিলতি স্পষ্ট। ঐত্রীকে যে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল তা প্রয়োগের আগে অ্যালার্জি টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু তা না করেই সরাসরি শিরায় সেই ওষুধ ইনজেক্সানের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন এক নার্স। পরে জানা যায়, যে নার্স ওই ইনজেক্সন প্রয়োগ করেছিলেন তাঁর নার্সিং সার্টিফিকেটই নেই। ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা দিয়েই হাসপাতালে কাজে যোগদান করেছেন তিনি।
ঐত্রীর দেহের ময়নাতদন্তেও অ্যালার্জির বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে লেখা রয়েছে, ঐত্রীর ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের একাধিক জায়গায় জমাট বাঁধা রক্ত মিলেছে। যা মারাত্মক অ্যালার্জির ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। মঙ্গলবারের রায়ে স্বাস্থ্য কমিশন ঐত্রীর পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি জ্বর নিয়ে মুকুন্দপুর আমরি হাসপাতালে ভর্তি হয় ঐত্রী দে নামে আড়াই বছরের শিশুটি। ১৭ জানুয়ারি সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। ঐত্রীর মা শম্পা দে-র দাবি, ভুল ইনজেক্সনেই মৃত্যু হয়েছে মেয়ের। এমনকী দরকারের সময় ঐত্রীকে অক্সিজেনের জোগান দিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য কমিশনের রায়ের পর শম্পাদেবী বলেন, সামান্য জ্বর নিয়ে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছিলাম। ওরা আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে। মেয়ে আর ফিরবে না, কিন্তু ওর আত্মা আজ শান্তি পেল। দোষী চিকিৎসকদেরও লাইসেন্স বাতিল করা উচিত।