আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। সেই কথা মাথায় রেখে এবার পশ্চিমবঙ্গের ১১৯টি উদ্বাস্তু কলোনির ২০,০০০ এর বেশি বাসিন্দাকে জমির স্বত্ত্ব দিতে দলিল তৈরির প্রস্তুতিতে নামল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
নবান্ন সূত্রে খবর, সেই উদ্দেশে ইতিমধ্যে প্রাথমিক ১৫,০০০ বাসিন্দার তালিকা সমৃদ্ধ ডেটাবাস তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে প্রশাসন। একই সঙ্গে দ্বিতীয় আর একটি তালিকায় ৬,৫০০ অধিবাসীর নামও উঠেছে।
১১৯টি উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের অধিকাংশই পূর্ব বঙ্গ, অধুনা বাংলাদেশে থেকে আসা শরণার্থী ও তাঁদের বংশধর।
গত মার্চ মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার ও বেসরকারি মালিকানাধীন জমিতে এখনও প্রচুর শরণার্থী কলোনি রয়ে গিয়েছে। বহু দিন ধরেই ওই কলোনিগুলির আইনি স্বীকৃতী দিয়ে শরণার্থীদের জমির মালিকানা দেওয়ার জন্য আমরা আবেদন জানাচ্ছি। কিন্তু তাতে কান না দিয়ে উল্টে কলোনির বাসিন্দাদের হাতে উচ্ছেদের নোটিশ ধরানো হচ্ছে।’
তার আগে রাজ্য সরকারের জমির উপর গড়ে ওঠা ৯৪টি শরণার্থী কলোনিকে আইনি স্বীকৃতি দেয় তাঁর নেতৃত্বাধীন প্রশাসন।
তবে নবান্নের এক শীর্ষস্থানীয় আধিকারিক জানিয়েছেন, জমির স্বত্ত্ব পাওয়ার পরে ১০ বছর তা বিক্রি করা যাবে না। তিনি জানিয়েছেন, কোভিড অতিমারী পরিস্থিতির মধ্যেই জমি জরিপ পদ্ধতি সম্পূর্ণ করে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতর।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, নাগরিক সংশোধন আইনের টোপ দিয়ে শরণার্থীদের নিজেদের ভোটব্যাঙ্কে টানার পরিকল্পনা ভেস্তে দিতেই তড়িঘড়ি তাঁদের জমির স্বত্ত্ব প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল সরকার। বিশেষ করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেওয়া মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোট টানার বিজেপি কৌশল বানচাল করতেই প্রশাসন তৎপর হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে বিজেপি জাতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহার অভিযোগ, ‘শরণার্থীদের বোকা বানাতে চাইছে তৃণমূল। সংশোধিত নাগরিক আইনে যখন তাঁদের নাগরিকত্বই দেওয়া হবে, তখন এই জমি দলিলের অর্থ কী? এ আসলে লোককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা।’