পুজো কমিটিগুলিকে ৫০,০০০ টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের মামলায় আদালতের চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। আদালতের প্রশ্নের মুখে জবাব খুঁজে পেলেন না অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। এদিন আদালত প্রশ্ন করে, অনুদান শুধু পুজোয় কেন? ইদ বা অন্যান্য উৎসব কী দোষ করল? শুক্রবারের মধ্যে এই প্রশ্নের জবাব আদালতে জমা দিতে বলেছেন বিচারপতি।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে ছিল সিটু নেতা সৌরভ দত্তের করা মামলার শুনানি। সেই মামলায় আদালত অ্যাডভোকেট জেনারেলকে প্রশ্ন করে, ‘শুধু কি দুর্গাপুজোতেই অনুদান দেয় সরকার? না কি অন্য উৎসবেও সরকারি অনুদান দেওয়ার চল রয়েছে? ইদে অনুদান দেওয়া হয়েছিল?’
সঙ্গে বিচারপতির আরও প্রশ্ন, ‘দুর্গাপুজো বাঙালির গর্ব। সেজন্য কি যেমন খুশি টাকা বিলি করা যায়? গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ধর্মে ধর্মে ভেদাভেদ করা যায়?’
সাফাই দিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলার চেষ্টা করেন, মাস্ক, স্যানিটাইজার প্রভৃতি কিনতে এই টাকা দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, সেগুলো তো আরও সস্তায় কিনে পুজো কমিটিগুলিকে দিতে পারত রাজ্য সরকার। তাছাড়া পুজো কমিটি যে টাকা দিয়ে মাস্ক, স্যানিটাইজারই কিনছে তা নিশ্চিত করতে কী পদক্ষেপ করেছে সরকার?
সঙ্গে বিচাপতির প্রশ্ন, সংক্রমণের জেরে যখন দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ, তখন পুজোর অনুমতি দেওয়া হল কোন যুক্তিতে? শুক্রবার মামলাটির পরবর্তী শুনানি।
আদালতের পর্যবেক্ষণ নিয়ে মন্তব্য না করলেও পুজো বন্ধ হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, দুর্গাপুজো শুধু বাঙালির উৎসব নয়, জাতীয় উৎসব। সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গাপুজো হবে। এই বিষয়ে সরকার সচেতন রয়েছে। ক্লাবগুলো সচেতন রয়েছে। পুজোয় যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়, তার জন্যে পুলিশ, স্বাস্থ্য দফতর, নবান্ন সজাগ রয়েছে। উৎসব চলবে। করোনাও থাকবে। সচেতনতার মধ্যে দিয়েই পুজো হবে।'
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, 'আমরা পুজো বন্ধের পক্ষে নই। তবে রাজ্য সরকারের উচিত ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা। ভিড় থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।'