বামফ্রন্ট জমানায় কলকারখানা বন্ধ হয়ে যেতে দেখেছে রাজ্যের মানুষ। এবার সেইসব বন্ধ কারখানার জমিতে নতুন শিল্প গড়ার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার। কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রথমবার ২০১৭ সালে পড়ে থাকা জমির পুনর্ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তাই সংশোধনী আনা হয় ১৯৬৫ সালের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্মস রুলস’এ। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হ্যাট্রিক করে ক্ষমতায় এসেছেন। তাই যুবক–যুবতীদের কর্মসংস্থানের আরও বেশি দরজা খুলতে চাইছেন তিনি।
এদিকে আগামী এপ্রিল মাসে হতে চলেছে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। সেখানেও শিল্পপতিদের বার্তা দিতে হবে। বিনিয়োগ টানতে হবে রাজ্যে। তাই আবার বন্ধ কলকারখানার জমিতে শিল্পস্থাপনের লক্ষ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। শিল্পস্থাপনে রাজ্য সরকারের নয়া ‘আপ্তবাক্য’—হয় বিনিয়োগ, নয়তো জমি ফেরত।
উল্লেখ্য, ১৯৫৫–৫৬ সালে ল্যান্ড সিলিং নিয়ম মেনে বহু জমি ‘খাস’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তখন পশ্চিমবঙ্গ জমিদারি অধিগ্রহণ আইন ১৯৫৩–এর ৬(৩) ধারা অনুযায়ী ছাড় দেওয়া হয় মিল, ফ্যাক্টরি বা ওয়ার্কশপকে। কলকারখানাগুলির মালিকদের মূলত সেই জমি রাখতে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কাউকে হস্তান্তর করা যাবে না। তারপর বন্ধ হয়েছে বহু কলকারখানা। সেই অব্যবহৃত জমি নতুন করে শিল্পের কাজে ব্যবহার করতে ২০১৭ সালে ল্যান্ড রিফর্ম রুলসে সংশোধনী আনা হয়। এবার সেই জমিতে কলকারখানা করতে চায় রাজ্য সরকার। আর যাঁরা তা মানবেন না তাঁদের জমি ফেরত দিতে হবে।
অন্যদিকে বন্ধ কলকারখানার জমি নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয় নবান্নে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়, পড়ে থাকা জমি চিহ্নিত করতে। সেই চিহ্নিতকরণের কাজ অনেকটাই এগিয়েও গিয়েছে। আর সেই জমি মালিকদের থেকে নিয়ে যাঁরা বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ফলে সেখানে আবার কলকারখানা গড়ে উঠবে। যুবক–যুবতীরা চাকরি পাবেন। জমি মালিকদের ডেকে হেস্তনেস্ত করতে চায় রাজ্য সরকার। কারণ এখন শিল্প গড়ে তোলাই মূল উদ্দেশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।