পুরভোটের দিনই ফের শিরোনামে রাজ্যপাল জদগীপ ধনখড়। বাংলার রাজনৈতিক মহলে শোরগোল ফেলে দিয়ে বিধানসভা ‘সমাপ্ত’ করেন রাজ্যপাল। অর্থাত্, বিধানসভাকে না ভেঙেই তিনি তা স্থগিত করলেন। এদিন টুইট করে রাজ্যপাল এই সিদ্ধান্ত জানান। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারার উপধারা ২-এর অধীনে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্থগিত থাকছে অধিবেশন।’
রাজ্যপালের টুইটে ধোঁযাশা তৈরি হলেও পরে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ স্পষ্ট করে জানান, স্বতঃপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত নেননি রাজ্যপাল। বলেন, ‘রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে অযথা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। কারণ মন্ত্রিসভার সুপারিশ মেনেই রাজ্যপাল অধিবেশন স্থগিত করেছেন। রাজ্যপাল কোনও স্বতঃপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত নেননি।’ তিনি আরও জানান, মন্ত্রিসভা ঠিক করে দেওয়া দিনক্ষণ অনুযায়ী পরবর্তীতে অধিবেশন ডাকবেন রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত, প্রথা অনুযায়ী শীতকালীন অধিবেশন শেষ হলেই পরিষদীয় দফতরের তরফে অধইবেশন শেষ হওয়া সংক্রান্ত ফাইল রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়। তবে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে সেই ফাইল পাঠাতে বিলম্ব করেছিল রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, গতবছর ১৭ নভেম্বর শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়েছিল বঙ্গ বিধানসভায়। তবে সেই ফাইল রাজ্যপালকে পাঠানো হয় ১০ ফেব্রুয়ারি। সেই ফাইলই স্বাক্ষর করে টুইট করেন রাজ্যপাল। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছিল ধোঁয়াশা।
উল্লেখ্য, দিল্লিতে বাজেট অধিবেশন চলাকালীন রাজ্যপাল ইস্যুতে একাধিকবার সরব হয়েছে তৃণমূল। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির কাছে ‘বেসরকারিভাবে’ রাজ্যপালকে সরানোর আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদরা। এরই মাঝে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালকে সরানোর দাবিতে সংসদে স্বতন্ত্র প্রস্তাব আনে তৃণমূল কংগ্রেস। ১৭০ ধারায় রাজ্যসভায় এই প্রস্তাব আনা হয়। এই আবহে রাজ্যপালের টুইট ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছিল।
বিগত বহু মাস ধরেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে উঠেছিল। এরই মাঝে হাওড়া পুরবিল নিয়ে সংঘাত বাড়ে রাজ্যপাল ও বিধানসভার অধ্যক্ষের মধ্যে। বিধানসভায় গিয়েই রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে তোপ দেগেছিলেন। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যপালের নাম না করেই জগদীপ ধনখড়কে ‘ঘোড়ার পাল’ বলে তোপ দাগেন। এর জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল পালটা জাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তার একটিও প্রমাণিত হলে রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক ভাবে রাজ্যপালের টুইটে শোরগোল পড়ে যায় আজকে। যদিও পরে শাসকদলের তরফে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়।