যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে শুক্রবার রাজ্য বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের উদ্বোধনী অধিবেশনে রাজ্য সরকারের লেখা ভাষণই পড়লেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ভাষণ শেষে অধ্যক্ষের ঘরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ৩০ মিনিট বৈঠক করলেন তিনি। বৈঠক শেষে রাজ্যপালকে গাড়িতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী ও অধ্যক্ষ। এর পর টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, সাংবিধানিক প্রথা মেনেই বিধানসভায় বক্তব্য রেখেছি।
শুক্রবার রাজ্যপাল রাজ্যের লেখা ভাষণ পড়েন কি না তা নিয়ে কৌতুহল ছিল চরমে। বৃহস্পতিবারই জল্পনা বাড়িয়ে জগদীপ ধনখড় মন্তব্য করেছিলেন, রাজ্যের লেখা ভাষণ পড়তে বাধ্য নন তিনি। রাজ্যপালের এই মন্তব্যের পর শুক্রবার প্রথা ভেঙে বিধানসভা থেকে রাজ্যপালের ভাষণের সরাসরি সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন কোনও সংবাদমাধ্যমের চিত্র সাংবাদিককে বিধানসভার কক্ষে ঢুকতে দেননি মার্শালরা।
ভাষণ শুরু হতেই মন দিয়ে শুনতে শুরু করেন শাসক ও বিরোধী দলের লোকেরা। মনযোগ এতটাই বেশি ছিল যে রাজ্যপালের বক্তব্য চলাকালীন কোনও কথার প্রতিবাদ করেননি বিরেধীরা।
এদিনের ভাষণে CAA আতঙ্কে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাজ্যপাল। শ্রদ্ধা জানান CAA আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মৃতদের স্মৃতির প্রতিও। এমনকী দেশে ধর্মীয় বিবিধতা সঙ্কটের মুখে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তুলে ধরেন রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্যের খতিয়ান।
ভাষণ শেষে বিধানসভা কক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাময়িক আলাপচারিতায় মিলিত হন তিনি। এর পর কথা বলেন কয়েকজন বিরোধী নেতার সঙ্গে। রাজ্যপাল যখন বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যাবেন বলে সবাই যখন প্রায় নিশ্চিত তখন পিছন ফিরে অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে পড়েন তিনি। সেখানে প্রায় ৩০ মিনিট চা পান সহযোগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন জগদীপ ধনখড়। এর পর বিধানসভা থেকে বেরোন তিনি। তাঁকে এগিয়ে দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিদায়বেলায় রাজ্যপালের হাতে পুষ্পস্তবক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিধানসভা থেকে রওনা দেওয়ার কিছুক্ষণ পর এক টুইটে রাজ্যপাল লেখেন, মহান সাংবিধানিক ঐতিহ্য মেনে আমি আজ আমার বক্তব্য রেখেছি। আশা করি প্রত্যেকেই সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করবেন। এটাই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি ও জনতার সেবা করার পথ। আশা করি প্রশাসনিক দায়িত্বে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সংবিধানকে অপ্রাসঙ্গিক না করে নিয়ম রপ্ত করবেন।