সাংবিধানিক পদে থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল। শনিবার এই অভিযোগ জানিয়ে রাজভবনে চিঠি পাঠাল পশ্চিমবঙ্গ ইমাম অ্যাসোসিয়েশন।
দিল্লির নিজামুদ্দিন মরকজ সংক্রান্ত রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিবৃতির প্রতিবাদে বাংলার ৪০,০০০ মসজিদের মধ্যে ২৬,০০০ মসজিদের ইমামদের নিয়ে আন্দোলনের হুমকি দিয়ে এ দিন তাঁকেই চিঠি পাঠিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন।
শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠিতে নিজামুদ্দিন মরকজের উল্লেখ করেন ধনখড়। তার আগে দীর্ঘ পাঁচ পাতার চিঠিতে রাজ্যপালকে তাঁর সাংবিধানিক ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন মমতা।
রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা চিঠিতে অভিযোগ করেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণ রোধ করতে নিজের সম্পূর্ণ ব্যর্থতা থেকে মানুষের নজর হঠাতে আপনার গোটা কৌশল ফাঁদার বিষয়টি আমি বুঝতে পেরেছি। সংখ্যালঘু তোষণ এতটাই প্রকট ও বিশ্রী যে নিজামুদ্দিন মরকজ নিয়ে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আপনি বলেন, আমাকে সাম্প্রদায়িক প্রশ্ন করবেন না। এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং প্রশংসার অযোগ্য।’
এ দিন রাজ্যজুড়ে রমজান মাসের প্রথম দিনে ধনখড়ের মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজ্য ইমাম অ্যাসোসিয়েশন।
আরও পড়ুন: আপনার সংখ্যালঘু তোষণ প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে, মমতাকে তোপ রাজ্যপালের
বেঙ্গল ইমামস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মহম্মদ ইয়াহিয়া রাজ্যপালের উদ্দেশে চিঠিতে লিখেছেন, ‘নিজামুদ্দিন মরকজের ঘটনা দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক্তিয়ারে পড়ে। এটা সম্পূর্ণ ওঁদের ব্যাপার। আমরা সকলেই জানি যে, দেশের সাধারণ মুসলিমদের সঙ্গে মরকজের কোনও সম্পর্ক নেই। একজন আইনজীবী হওয়ার সুবাদে আশা করছি আপনি বিষয়টি বিলক্ষণ জানেন।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ওই প্রশ্ন সাম্প্রদায়িক। তাতে আপনার কী অসুবিধা? মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ওঁরও বাক- স্বাধীনতা রয়েছে।’
উল্লেখ্য, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের বিরুদ্ধে এই প্রথম কোনও ধর্মীয় সংগঠন প্রতিবাদ জানাল।
আরও পড়ুন: মনে রাখবেন আপনি মনোনীত রাজ্যপাল আর আমি নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী:ধনখড়কে চিঠি মমতার
রাজভবন সূত্রে খবর, শনিবার সমস্ত দফতর বন্ধ থাকায় চিঠির প্রাপ্তি সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব নয়। এই বিষয়ে সোমবার জানা যাবে।
অন্য দিকে, রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘এই চিঠি এক বড় ষড়যন্ত্রের অংশ। সবাই জানেন বাংলা থেকে বেশ কিছু সংখ্যক মানুষ নিজামুদ্দিন মরকজের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁদের অনেককেই খুঁজে বের করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। রাজ্যপাল শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সতর্ক করেছেন। মনে রাখবেন, বাঘের পিঠে সওয়ার হওয়া সহজ কিন্তু নামা কঠিন। মমতার উচিত তাঁর সাম্প্রদায়িক রাজনীতি অবিলম্বে বন্ধ করা।’
এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি কোনও তৃণমূল নেতা।