সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকায় (NEET-UG) দুর্নীতি নিয়ে প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। বুধবার বিধানসভার অধিবেশনের শুরুতেই নিট দুর্নীতি নিয়ে প্রস্তাব পেশ করা হয়। যদিও সেই প্রস্তাব পুরোপুরি অবৈধ বলে দাবি করেছে বিজেপি। সেইসঙ্গে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে বিজেপির তরফে বলা হয়েছে যে 'অপা'-র (অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়) খাটের নীচ থেকে টাকা উদ্ধারের দৃশ্যের সাক্ষী থেকেছেন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। ডাক্তারি পরীক্ষার ভার যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের হাতে দেওয়া হয়, তাহলে তো পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠবে। যদিও বিজেপির আপত্তি বা পালটা আক্রমণ ধোপে টেকেনি। সংখ্যার জোরে বিধানসভায় নিট বিরোধী প্রস্তাব পাশ করিয়ে নেওয়া হয়।
NEET-র প্রশ্নফাঁস নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী
বুধবার বিধানসভায় নিট দুর্নীতি নিয়ে প্রস্তাব পেশের পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুন বলেন যে দুটি ধাপে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় জালিয়াতি হয়েছে। প্রথমত, গ্রেস নম্বর দেওয়া হয়েছে পরীক্ষার্থীদের একাংশকে। দ্বিতীয়ত, নম্বর নিয়ে জালিয়াতি করা হয়েছে। নিটের ক্ষেত্রে যে দুর্নীতি হয়েছে, সেটার শিকড় আরও গভীরে লুকিয়ে আছে। টাকার বিনিময়ে যে একটি চক্র চলছিল, সেটা তদন্তে উঠে এসেছে। অথচ বিষয়টি নিয়ে চুপ করে আছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
স্রেফ 'হিমশৈলের চূড়া' তুলে ধরার পরে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য প্রশ্ন করেন, নিট নিয়ে যা হয়েছে, সেটা মাথায় রেখে কেন কেন্দ্রের হাত থেকে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল পরীক্ষা আয়োজনের ভার কেড়ে নেওয়া হবে না? সেই বিষয় নিয়ে কেন আলোচনা করা হবে না পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়, সেই প্রশ্নও তোলেন ব্রাত্য।
NEET নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় যেদিন নিট নিয়ে প্রস্তাব পাশ করা হল, তার আগেরদিনই নতুন করে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা নেওয়ার আর্জিতে সায় দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এমন কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি, যা প্রমাণ করতে পারে যে সার্বিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। সেই পরিস্থিতিতে নতুন করে নিট পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ দিলে ২৪ লাখ পরীক্ষার্থীর উপরে গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: NEET-UG Exam: নিটে ফিজিক্সের প্রশ্নে কোনটা সঠিক উত্তর, জানাল IIT, নম্বর কাটা যাবে ৪ লাখ পরীক্ষার্থীর
সেইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নতুন করে নিট পরীক্ষা নেওয়া হলে স্নাতক স্তরের মেডিক্যাল কোর্সে ভরতির সূচি পিছিয়ে যাবে। তার জেরে মেডিক্যাল কোর্সের পড়াশোনার উপরে বড় প্রভাব পড়বে। ভবিষ্যতে সময়মতো যোগ্য চিকিৎসক পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায় তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।