বিধানসভা নির্বাচনের আগে পশ্চিমবঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীদের আরও চাঙ্গা করতে রাজ্য থেকে কয়েকজনকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী করা হতে পারে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন সাংসদদের মধ্যে এর মধ্যে রয়েছে মুকুল রায়ের নামও। যিনি বর্তমানে সংসদের কোনও কক্ষেরই সদস্য নন।
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ১৮টি আসন পেলেও মাত্র ২ জন কেন্দ্রীয় পান রাজ্যবাসী। তাও আবার প্রতিমন্ত্রী। এর মধ্যে আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় আগে থেকেই মন্ত্রী ছিলেন। ফলে হিসাব মতো বিজেপিকে ২ থেকে ১৮ করে রাজ্যবাসীর প্রাপ্তি হয় ১ জন প্রতিমন্ত্রী। তিনি হলেন রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী।
এই নিয়ে বিজেপিকে বিঁধতে ছাড়েনি তৃণমূল। তাদের দাবি ছিল, বিজেপি পশ্চিমবঙ্গকে গুরুত্ব দেয় না। তাই ১৮ জন সাংসদের মধ্যে মাত্র ২ জনকে প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদা পাননি কেউ। বিজেপির তরফে যদিও তখন জানানো হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গে জিতে আসা সাংসদরা সবাই আনকোরা। সংসদীয় রাজনীতি সম্পর্কে তাঁদের অভিজ্ঞতা খুব কম। তাই কিছুদিন পর তাদের মন্ত্রী করা হবে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই প্রতিশ্রুতি পালন করতে চলেছেন মোদী।
সূত্রের খবর, বিজেপির রাজ্য কমিটিতে যারা জায়গা পেয়েছেন তারা বাদ দিয়ে যে কোনও সাংসদকে মন্ত্রী করা হতে পারে। ফলে দিলীপ ঘোষ, সুভাষ সরকার ও লকেটের মন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা কম। বাকিদের মধ্যে শান্তনু ঠাকুর, জন বারলা, সুকান্ত মজুমদারের নাম শোনা যাচ্ছে। নাম শোনা যাচ্ছে ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রমের। তবে সব থেকে আশ্চর্য করা নাম মুকুল রায়ের।
মুকুল রায় এখন আর সাংসদ নন। রাজ্য বিজেপিতে তাঁর তেমন পসার নেই। কৈলাস বিজয়বর্গীয়র মাধ্যমে সরাসরি দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন তিনি। দিলীপ ঘোষের ধার ধারেন না। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে মন্ত্রী করলে লোকসভা নির্বাচনের আগে দিলীপ লবি ক্ষুব্ধ হতে পারে। এত প্রতিকূলতার পরেও মুকুলের নাম নিয়ে জোর জল্পনা চলছে।
বিজেপিতে যোগদানের পর থেকে মুকুল এখনো তেমন কিছুই পাননি। তাঁকে কার্যকরী সমিতির সদস্য করে রাখা হয়েছে। এর বাইরে প্রাপ্তি শূন্য। বিজেপির অন্দরের খবর, মুকুল ফের তৃণমূলে ফেরত যেতে পারেন বলে আশঙ্কা ছিল দলের নেতাদের একাংশের মধ্যে। তাই তাঁকে কোনও পদ বা সুযোগ দেওয়ার আগে বিশ্বস্ততা পরীক্ষা করছিল দল। সেই পরীক্ষায় পাশ করেছেন মুকুল।
বিজেপি সূত্রের খবর, মুকুল পোড় খাওয়া রাজনীতিক। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। ভোটের মুখে আনকোরা মুখকে মন্ত্রী করলে ঘেঁটে-ঘ করতে পারে সে। সেদিক থেকে মুকুল অনেক নিরাপদ। তাই দরকারে তাঁকে অন্য রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় জিতিয়ে আনতে পারে বিজেপি।
তবে এসব জল্পনা স্বীকার করেননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, আমি মন্ত্রী হবো না আগেই বলে দিয়েছি। এবার যাকে মন্ত্রী করবে করুক। সংগঠনের কাউকে মন্ত্রী করলে তার জায়গায় অন্য লোক আনা হবে। বিজেপিতে লোকের অভাব নেই।