একদিকে মামলা, অন্যদিকে বিজ্ঞপ্তি। রাজ্য বিজেপি–র রথযাত্রা নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। বুধবার রথযাত্রা রুখতে একটি জনস্বার্থ মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। আর তারপরই বিজেপিকে চিঠি দিয়ে নবান্ন জানিয়ে দিল রথযাত্রার জন্য অনুমতি নিতে হবে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে থেকে। সুতরাং স্থানীয় প্রশাসন অনুমতি না দিলে রথযাত্রা জলে।
এই রথযাত্রা হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতির সম্ভাবনা রয়েছে বলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। আইনজীবী রমাপ্রসাদ রায় মামলা দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা। বাংলায় মোট ৫টি রথযাত্রা করার কথা ঘোষণা করেছে বিজেপি। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি নবদ্বীপ থেকে প্রথম রথযাত্রার সূচনা করবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। ওই রথযাত্রার জন্য অনুমতি চেয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দেন রাজ্য বিজেপির সহ–সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই চিঠি পাওয়ার পরই আজ নবান্নের পক্ষ থেকে পাল্টা চিঠি দেওয়া হয়েছে প্রতাপবাবুকে।
ওই চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে যে এলাকা দিয়ে রথযাত্রা যাবে সেখানকার প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। আইন মেনেই কর্মসূচি করতে হবে। এক্ষেত্রে নবান্ন স্পষ্টভাবে বলল না অনুমতি দেওয়া হচ্ছে কি হচ্ছে না। আর স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে বিষয়টিকে একপ্রকার ঝুলিয়েও রাখা হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
জেপি নড্ডার পাশাপাশি বাকি তিনটি রথযাত্রার সূচনা করার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। পরিবর্তনের রথযাত্রাগুলির যাত্রা শুরু হবে কোচবিহার, কাকদ্বীপ, ঝাড়গ্রাম ও তারাপীঠ থেকে। ৮ ফেব্রুয়ারি কাকদ্বীপের যাত্রা শুরু হয়ে শেষ হবে কলকাতায়। তারাপীঠের যাত্রা শুরুর কথা ৯ ফেব্রুয়ারি। যাত্রাপথ উল্লেখ করে মুখ্যসচিবকে ইতিমধ্যেই চিঠি পাঠিয়েছেন বঙ্গ বিজেপি নেতারা।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত দল নিশ্চিত নয় যে আদৌ স্থানীয় প্রশাসন রথযাত্রার অনুমতি দেবে কিনা। তবে আইন মেনে রথাযত্রা করার জন্য যা করা প্রয়োজন তা করা হবে। আজ কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন আইনজীবী রামাপ্রসাদ সরকার। মামলায় যুক্তি দেখানো হয়েছে, রাজ্যজুড়ে ওই রথযাত্রায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে, বাড়তে পারে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা। এমনকী জনসমাগম করোনা সংক্রমণও ছড়াতে পারে। মামলার পার্টি করা হয়েছে কেন্দ্র, রাজ্য ও বিজেপিকে।
সূত্রের খবর, অনুমতি না মিললেও রথযাত্রা হবে বলেই জানিয়েছে পদ্ম শিবির। এই রথযাত্রা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক আকচাআকচি। এই বিষয়ে মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘আদালত কী করবে সেটা আদালতের বিষয়। তবে যিনি রথযাত্রার কাণ্ডারী সেই লালকৃষ্ণ আডবাণীকেই বিজেপি পেছনের সারিতে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে।’