করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়ে চিঠি লিখলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাতে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য একগুচ্ছ দাবি রেখেছেন তিনি। সোমবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে এব্যাপারে জানান দিলীপবাবু।
তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ কেন্দ্রের ২টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কৃষক নিধি সম্মান প্রকল্পের ১,৬৯১ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। এই টাকা পশ্চিমবঙ্গের গরিব কৃষক পেতে পারতেন।
এছাড়া আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের ৪,৫০০ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে বলে জানান তিনি। সঙ্গে জানিয়েছেন, এই প্রকল্প চালু হলে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ করোনায় সুবিধা পেতেন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি গরিব মানুষকে ৩,০০০ টাকা ভাতা ও বাড়িতে রেশন পৌঁছে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে রেশন দুর্নীতির যে অভিযোগ বিজেপি করছিল তা যে সত্য তা সরকারের পদক্ষেপেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। রেশন দুর্নীতির জন্য প্রায় পৌনে তিনশ রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার। ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দিলীপবাবুর দাবি, কেন্দ্রের পাঠানো রেশনের চালের মান ভাল নয় বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক নয়। কেন্দ্র ভাল চালই পাঠাচ্ছে। সেই চাল বস্তা বদল করে বিক্রি করে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। বদলে খারাপ চাল রেশনে বিলি করা হচ্ছে।
আসন্ন মরশুমে সমস্ত কৃষকের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান ও অন্যান্য অর্থকরী ফসল সরকারের কেনা উচিত বলে দাবি তুলেছেন দিলীপবাবু। তাঁর কথায়, এই ধান থেকে চাল করে সরকার সাধারণ মানুষকে খাওয়াতে পারবে। তাতে দুপক্ষেরই লাভ হবে।
দিলীপবাবুর আশঙ্কা, রাজ্যে ১২টি হাসপাতাল আংশিক বা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা কোয়ারেন্টাইনে যাচ্ছেন। পুলিশেও করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। এভাবে চললে চিকিৎসা ও আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে বলে জানান তিনি।
সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন দ্বিগুণ করার দাবি জানিয়েছেন দিলীপবাবু। সঙ্গে পর্যাপ্ত সুরক্ষা কিট বিতরণের জাবি জানিয়েছেন।
দিলীপ ঘোষের দাবি, পশ্চিমবঙ্গ করোনা পরীক্ষায় এখনো পিছিয়ে আছে। তাই পরীক্ষার সংখ্যা বাড়াতে হবে। সঙ্গে তাঁর দাবি, করোনা চিকিৎসায় আয়ুষ বিভাগকে কাজে লাগানো হোক। একাধিক রাজ্য এই বিভাগের মাধ্যমে উপকার পেয়েছেন।
সঙ্গে তিনি জানান, চিকিৎসকদের করোনায় মৃতদের ডেথ সার্টিফিকেট লেখার দায়িত্ব দিতে হবে। কোনও কমিটির হাতে এই দায়িত্ব দেওয়া চলবে না।
রাজ্য বিজেপি সভাপতির দাবি, প্রবাসী শ্রমিকদের ফেরানোর জন্য রেল ভাড়া নিচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা ঠিক নয়। সেজন্য ৮৫ শতাংশ ভর্তুকি দিচ্ছে কেন্দ্র। বাকি ১৫ শতাংশ রাজ্যকে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য তা মানতে রাজি নয়।