রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের জমিতে গড়ে ওঠা ১১৯টি কলোনির সমস্ত জমির রায়তি অধিকার সেখানকার বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি দফতর। বুধবার নবান্নে রাজ্যের আদিবাসী, তফশিলি ও বিভিন্ন উপজাতির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের সময় ফের সেই কথা মনে করালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন তিনি বলেন, ‘জমির কাগজ নেই, অথচ বহু বছর ধরে এই রাজ্যের বাসিন্দা, এমন প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার মানুষকে জমির পাট্টা দেওয়া হবে। তার মধ্যে ২৫ হাজার পাট্টা দেওয়ার কাজ চলছে।’ এমন বেশ কিছু ব্যক্তির হাতে এদিন জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘আদিবাসীদের জমি কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। তার জন্য আলাদা আইন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সব উদ্বাস্তু কলোনিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। উদ্বাস্তুদের স্বীকৃতি দেওয়ার মানে তাঁরা সকলেই এই রাজ্যের তথা এই দেশের নাগরিক।’
জাতি শংসাপত্র (এসসি, এসটি সার্টিফিকেট) পেতে অনেক সমস্যায় পড়তে হয় আদিবাসী, তফশিলি ও অন্যদের। এ কথা মনে করিয়ে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এবার আর এসসি, এসটি সার্টিফিকেট নিয়ে আর কোনও অসুবিধা হবে না। কেন্দ্র বলে ১৯৫০ সালের কাগজপত্র দেখাতে। কিন্তু রাজ্য সরকার নতুন একটি সহজ নিয়ম করে দিয়েছে। পিতার পরিবারের দিক থেকে যদি কারও জাতি শংসাপত্র থাকে তবে নতুন আবেদনকারীর শংসাপত্র পেতে কোনও সমস্যা হবে না। আবেদনের পর ৪ সপ্তাহের মধ্যেই তা পাওয়া যাবে।’
এ ব্যাপারে এক আধিকারিক জানান, ‘ভাই, কাকার ছেলে, কাকার মেয়ে, পিসি— বাবার পরিবারের দিক থেকে এমন কারও জাতি শংসাপত্র থাকলে যে কেউ আবেদন করলে নতুন শংসাপত্র পেয়ে যাবেন। আর যাঁদের কাছে কোনও শংসাপত্র নেই, নতুন আবেদন করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও তেমন কোনও অসুবিধা হবে না। এলাকায় সরকারি প্রতিনিধিরা গিয়ে বয়স্ক আদি বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁরাই আবেদনকারীকে এসসি, এসটি সার্টিফিকেট দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেবেন। ১৯৫০–এর কোনও কাগজপত্রের কোনও দরকার নেই।’
এদিন ওই একই অনুষ্ঠান থেকে তফশিলি জাতি ও উপজাতি ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপ দেয় রাজ্য সরকার। রিমোটের মাধ্যমে ইটাহারে নির্মীত বাস টার্মিনাসের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সরকারি জমির ওপর ওই বাস টার্মিনাস তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৮ কোটি টাকা। পাশাপাশি এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে রাজ্যের ২ লক্ষ যুবক–যুবতীর হাতে তুলে দেওয়া হবে বাইক। এর জন্য লোন দেওয়া হবে রাজ্যের কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলি থেকে।