‘যেখানে নমাজ পড়া হবে, সেটাই ওয়াকফ সম্পত্তি হয়ে যাবে’- কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এমনই মন্তব্য নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে তুলোধোনা করলেন বিজেপি নেতারা। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দাবি করেছেন, শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ যে মন্তব্য করেছেন, তাতে কলকাতার একটা বড় অংশই ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কল্যাণের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বিমানবন্দর, পার্ক, রেললাইনের মতো জায়গাকেও ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হতে পারে বলে দাবি করেছেন সুকান্ত। তাঁর দাবি, ‘পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মতো বাংলায় হিন্দুদের সম্পূর্ণ নির্মূল নিশ্চিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে ছাড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল কংগ্রেস।’
‘যেখানে নমাজ পড়বে, সেটাই ওয়াকফ সম্পত্তি হয়ে যাবে’
আর কল্যাণের যে মন্তব্য নিয়ে সুকান্ত আক্রমণ শানিয়েছেন, তা শনিবার ধর্মতলার সভা থেকে বলেছেন তৃণমূল সাংসদ। যিনি ওয়াকফ বিলের জন্য তৈরি যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) অন্যতম সদস্যও। সেই মঞ্চ থেকেই কল্যাণকে বলতে শোনা যায়, ‘১৯৬৩ সালে ভারতবর্ষের সংবিধানে, ভারতবর্ষের সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে দুটি জিনিস নির্ধারিত হয়েছিল।’
শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, 'প্রথমত, আপনি যেখানে নমাজ পড়বেন বা যাঁরাই নমাজ পড়বেন কোনও এক জায়গায়, সেটাই ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে। যে কোনও একটা জায়গায় যদি ২০ জন বা ২৫ জন বা ১৫ জন বা পাঁচজন নিয়মিত নমাজ পড়েন, সেটাকে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আর নমাজ যে মসজিদে পড়তে হয়, সেটার কোনও বাধ্যবধকতা নেই।'
মমতাকে আক্রমণ সুকান্তের
তাঁর সেই মন্তব্যের ভিডিয়ো পোস্ট করে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি বলেন, ‘এই মন্তব্য করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। যিনি আবার ওয়াকফ নিয়ে গঠিত স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য। তাঁর মতে, মুসলিমরা যেখান নমাজ পড়বেন, তা স্বাভাবিকভাবেই ওয়াকফ সম্পত্তিতে পরিণত হবে।'
বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি বলেন, 'এটার (কল্যাণের মন্তব্য) অর্থ হল, যে কোনও অজুহাতে রাস্তা, রেললাইন, বিমানবন্দর, পার্ক-সহ অন্যান্য জায়গায় নমাজ পড়া হলে সেটাকে ওয়াকফ জমি হিসেবে দাবি করা যেতে পারে। এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, কলকাতার একটা বড় অংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের হাতে চলে যাবে।’
সত্যিটা বলার জন্য ধন্যবাদ, কল্যাণকে খোঁচা
একইসুরে বঙ্গ বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেছেন, ‘সত্যিটা এত সোজাভাবে বলে দেওয়ার জন্য তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়কে ধন্যবাদ। তাঁর কথা শুনলে বোঝা যায়, কীভাবে ওয়াকফের মাধ্যমে জমি দখল হয়।’
আরও পড়ুন: Siddiqullah Chowdhury: ‘মুসলমানের অধিকার রক্ষায়…’ ওয়াকফ ইস্যুতে এবার ফিরহাদকে খোঁচা সিদ্দিকুল্লার
সেইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখন এরা দাবি করছে যে ভারতবর্ষের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ স্থান তাদের। পুরো দক্ষিণ কলকাতা, ধর্মতলা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা নাকি এদের। ওয়াকফ আইনের মাধ্যমে এরা ভারতবর্ষ দখল করার একটা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতবর্ষ দখলের এদের এই পরিকল্পনায় সম্পূর্ণ সাহায্য করছে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বামপন্থী দলগুলো। ওয়াকফ কতটা ভয়ংকর, সেটা আপনারা একটু খোঁজ নিলেই বুঝতে পারবেন।’