স্বাস্থ্যভবনের সামনের ধর্নাস্থল। একপাশে সারি সারি খাবারের স্টল। সেখানে উপচে উঠছে খাবার। কিন্তু কারা এত খাবার পাঠাচ্ছেন? তারই খোঁজ নিল হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
আসলে দলে দলে সাধারণ মানুষ আসছেন। যার যেমন ক্ষমতা তেমন খাবারই দিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কেউ নিয়ে এসেছেন মিষ্টি। কেউ আবার কেক। কেউ আবার খিচুরি রান্না করে এনেছেন। পরিবেশন করছেন হোটেল ম্যানেজমেন্টের ছাত্রছাত্রীরা। কেউ আবার সিনিয়র চিকিৎসক। জুনিয়রদের জন্য নিয়ে আসছেন খাবার। একদল যুবক এলেন। সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন খাবার। তুলে দিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের হাতে। বললেন, দিদি আপনারা লড়াই চালিয়ে যান। আমরা পাশে আছি।
আপনারা কারা?
প্রশ্ন করতেই হেসে ফেলেন যুবকরা। একেবারে সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদটা করতে পারি না। কিন্তু যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন তাঁদের জন্য যদি এতটুকু করতে পারি তার জন্য নিজেকে ধন্য মনে করব।
অনেকেই স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে কাজ করছেন। সকাল হলেই চলে আসছেন ধর্নাস্থলে। এক মহিলা বললেন, ওরা লড়াই করছেন। খাবার দিয়ে যে পূণ্যলাভ করছি তার জন্য ওদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ওদের লড়াইয়ের পাশে সবসময় থাকব।
একেবারে অন্যরকম ছবি। চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়িয়ে খাবার বন্টন করছেন ট্যাক্সিচালক, ছোট ব্যবসায়ী। বেসরকারি এজেন্সির এক নিরাপত্তারক্ষী বলেন, কাছেই অফিসে কাজ করি। সময় পেলেই ঘুরে যাই এই ধর্নাস্থলে। ওদের সুরক্ষাটাও তো দেখতে হবে।
এই আন্দোলন যেন বাংলার চেনা ছবিটাই বদলে দিয়েছে। এতদিন বিক্ষোভ কর্মসূচি মানেই দেখা যেত মাইক বাজছে তারস্বরে। বিরাট বিরাট হোর্ডিং, ব্যানার। সেখানে নেতা নেত্রীদের ছবি। সেই নেতা নেত্রীদের কাছাকাছি গিয়ে কে কতটা ছবি তুলতে পারবে তারই প্রতিযোগিতা চলছে। কিন্তু এই ছবি একেবারেই নেই এই ধর্নাস্থলে।
দলে দলে মানুষ আসছেন। নীরবে খাবার দিচ্ছেন। তারপর চলে যাচ্ছেন। একবারও বলছেন না প্রাপ্তি স্বীকার করুন। কিংবা এই যে খাবার দিলাম তার ছবি তুলে নিয়ে রাখি। এমন ছবি শেষ কবে দেখেছে বাংলা?
কিছু খাবার বাড়তি হচ্ছে। সেসব কোথায় যাচ্ছে?
এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, বহু মানুষকে বণ্টন করা হচ্ছে। ড্রাই ফুড আমরা ত্রাণে নিয়ে যাব। রামকৃষ্ণ মিশনের কাছেও প্রয়োজনে পৌঁছে দেব।
বাস্তবিকই ধর্নাস্থলে যেন অন্নপূর্ণার ভাণ্ডার। ফুরোনর আগেই চলে আসছে খাবার। অনলাইন ডেলিভারি অ্যাপে কারা অর্ডার করছেন? পরিচয়গুলো জানতে পারছেন না কেউ।