রানাঘাটের গেদেতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার করলেই বাংলাদেশের ঝিনাইদহ। সেখানকারই কালীগঞ্জ উপজেলার ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাংসদ ছিলেন আনোয়ারুল আজিম আনার। গত ১২ মে ভারতে এসে বরানগরে বন্ধুর বাড়িতে ছিলেন তিনি। পরে সেখান থেকে নিউটাউনে যান সেই বাংলাদেশি সাংসদ। এরপরই রহস্যজনক ভাবে 'নিখোঁজ' হন তিনি। তাঁর মেয়ে ঢাকা পুলিশের দ্বারস্থ হন। এদিকে এদেশে বরানগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন আনোয়ারুলের বন্ধু। পরে নিউটাউনে একটি ফ্ল্যাটে মেলে আনোয়ারুলের খুন হওয়ার প্রমাণ। যদিও রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত সেই বাংলাদেশি সাংসদের দেহ মেলেনি। তবে বাংলাদেশ থেকে ইতিমধ্যেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে কেন খুন হয়েছেন আনোয়ারুল? এই ঘটনা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে মনে করা হচ্ছে, তাঁর খুনের সঙ্গে সাংসদের অতীত জীবনের যোগ থাকতে পারে। (আরও পড়ুন: ঋণে পাওয়া ছাড়ের ওপর কি আয়কর দিতে হবে ব্যাঙ্ক কর্মীদের? বড় রায় সুপ্রিম কোর্টের)
আরও পড়ুন: রাজ্যে ষষ্ঠ পে কমিশনের সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর, বড় দাবি শাসকদলের শীর্ষ নেতার
আরও পড়ুন: লিভ এনক্যাশমেন্ট নিয়ে বড় রায় আদালতের, চাকরিজীবীদের মুখে ফুটবে হাসি?
রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতায় খুন হওয়া বাংলাদেশি সাংসদ আনোয়ারুলের খুনের সূত্র লুকিয়ে থাকতে পারে ঝিনাইদহে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের মধুগঞ্জ বাজার এলাকাতে পৈতৃক বাড়ি আনোয়ারুলের। দাবি করা হয়, এক সময় এই আনোয়ারুল ঝিনাইদহ এলাকার অপরাধীদের 'গডফাদার' হয়ে উঠেছিলেন। হুন্ডি কারবার, অস্ত্র ও মাদক পাচারের সঙ্গে যোগ থাকার অভিযোগে ইন্টারপোলের তরফ থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল আনোয়ারুলের বিরুদ্ধে। তবে সেটা ২০০৬ সালের কথা। ২০০৯ সালেই আনুয়োরুলের নাম নাকি কাটা পড়েছিল ইন্টারপোলের খাতা থেকে। এরপর ২০১৪ সালে আওয়ামি লিগের টিকিটে নির্বাচনে জিতে প্রথমবার সংসদে পা দেন আনোয়ারুল। এরপর থেকে পরপর তিনবার ঝিনাইদহ-৪ আসনে জয়ী হন তিনি। এর আগে অবশ্য একটা সময়ে আনোয়ারুলের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের খাতাতেও ২৪টি মামলা ছিল। (আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের চোখ রাঙানি দক্ষিণবঙ্গে, কলকাতাসহ জেলায় জেলায় চরম দুর্যোগের পূর্বাভাস)
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ৭৭টি মুসলিম শ্রেণিকে OBC সংরক্ষণ দেওয়া গণতন্ত্রকে অপমান: HC
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, একটা সময়ে বনগাঁর ওপারে বাংলাদেশের বাঘাভাঙ্গা সীমান্ত পথে চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই আনোয়ারুল। প্রশাসনের সঙ্গেও যোগ ছিল তাঁর। ওদেশের পুলিশের সঙ্গে 'টোকেন চুক্তি' ছিল তার। এভাবেই বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন আনোয়ারুল। এদিকে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আনোয়ারুল চিকিৎসার জন্যে একা কলকাতায় এসেছিল বলে দাবি করা হলেও আদতে তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশের আরও অন্তত দুই নাগরিক ছিলেন। এদিকে দাবি করা হয়, আনোয়ারুলকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ট্রলি ব্যাগে ভরে নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গিয়েছে, কমপক্ষে এক মাস আগে ঝিনাইদহেই এই খুনের পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আনোয়ারুল গত ১৩ মে নিউটাউনের আবসনে ঢোকার ২০ মিনিটের মধ্যেই তাঁকে খুন করা হয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করা হয়। দেহে যাতে পচন না ধরে তার জন্য ফ্রিজে দেহকে টুকরো টুকরো করে কেটে রেখে দেওয়া হয়েছিল।