বাঘাযতীনে বহুতল হেলে পড়ার ঘটনার ভয়াবহতা কাঁপিয়ে দিয়েছে গোটা কলকাতার বহুতলের বাসিন্দাদের। প্রশ্ন উঠছে শহরের হেলে পড়া বহুতলগুলির বাসিন্দা ও তার আসেপাশের মানুষজনের নিরাপত্তা নিয়ে। চাপের মুখে সাত তাড়াতাড়ি বাঘাযতীনে হেলে পড়া বাড়ি ভাঙতে শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা। ট্যাংরায় হেলে পড়া বহুতলটও ভেঙে ফেলা হবে বলে নোটিশ জারি করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৩ সালের মে মাসে গার্ডেনরিচের পাহাড়পুর রোডের ওপর যে হেলে পড়া বহুতল আবিষ্কার হয়েছিল তার কী খবর? খতিয়ে দেখল হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা।
কলকাতা শহরের হেলে পড়া বহুতল নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই এই ধরণের বাড়ি ভাঙতে কোমর বেঁধে নেমেছে পুরসভা। বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনিতে হেলে পড়া বাড়ি সেদিন থেকেই ভাঙা শুরু করেছেন পুরসভার আধিকারিকরা। ট্যাংরায় হেলে পড়া বাড়ির খোঁজ মেলার সঙ্গে সঙ্গে তা ভেঙে ফেলা হবে বলে নোটিশ জারি হয়েছে। কিন্তু মেয়র ফিরহাদ হাকিমের খাসতালুক বলে পরিচিত গার্ডেনরিচে এব্যাপারে কলকাতা পুরসভার নীতি ভিন্ন। সেখানে প্রায় দেড় বছর আগে খোঁজ মেলা হেলে পড়া বাড়িতে শুধু ছাদে গর্ত করে ফেরত চলে এসেছেন পুরসভার আধিকারিকরা। দেড় বছর পরেও বহাল তবিয়তে দাঁড়িয়ে আছে সেই হেলে পড়া বাড়ি। উপগ্রহ চিত্র ও গুগল স্ট্রিট ভিউ অন্তত সেকথা বলছে।
ছবিতে দেখা যাচ্ছে পাহাড়পুর রোডে যে বহুতলটি হেলে পড়েছিল তার ছাদে বেশ কয়েকটি গর্ত। তবে প্রতিটি তলাতেই ছাদে গর্ত করা হয়েছে কি না তা উপগ্রহ ছবি দেখে বোঝা সম্ভব নয়। যদিও ২০২৩ সালের ১৬ মে বহুতলটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে বলে জানায় পুরসভা। কিন্তু ভাঙা বলতে ওই ছাদ ফুটো করা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণ বেআইনি ভবনে যাতে কেউ বসবাস করতে না পারেন সেজন্য ছাদ ফুটো করে দেয় পুরসভা। কিন্তু হেলে পড়া ভবনের ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপে হিতে বিপরীত হতে পারে। এমনিতেই হেলে পড়া বহুতল যে কোনও সময় ধসে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। তার ওপর ছাদ ফুটো করে দিলে ভবনের কাঠামোর দৃঢ়তা কমে যেতে পারে। যার ফলে ভবনটি ধসে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে বাড়ির ভিতরে কেউ না থাকলেও আসেপাশের মানুষের প্রাণহানির সম্ভাবনা থাকে।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, হেলে পড়া ভবনে যদি কেউ বসবাস করেন তাহলে প্রাণের ঝুঁকি রয়েছে জেনেই করবেন। ছাদ ফুটো করে তাদের রক্ষা করলেও আসেপাশের মানুষকে কেন ঝুঁকির মুখে ফেলছে পুরসভা। বিশেষ করে গার্ডেনরিচের হেলে পড়া বাড়িটির সামনে রয়েছে পাহাড়পুর রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তা। সেখানে ভবনটি ধসে পড়লে তো বহু মানুষের বেঘোরে প্রাণ যেতে পারে। আরও প্রশ্ন, কেন শহরের স্থানভেদে হেলে পড়া বাড়ি নিয়ে পুরসভার অবস্থান আলাদা। কেন বাঘাযতীনে হেলে পড়া বাড়ি ভাঙতে পারলেও গার্ডেন রিচে ছাদ ফুটো করেই ফিরে আসতে হয় তাদের?