শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে উঠে এসেছে বিভাস অধিকারীর নাম। মঙ্গলবার তাঁকে নিয়ে তাঁর শিয়ালদহের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাল ইডি। বিভাসকে সঙ্গে নিয়েই প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি চালানো হয় তাঁর ফ্ল্যাটে। ইডির আধিকারিকরা বেরিয়ে গেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন কোনও ঘোষণা ছাড়াই তাঁর ফ্ল্যাটটি সিল করে দেওয়া হয়েছিল। সে কারণে তিনি ইডির কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন ফ্ল্যাটটি খুলে দেওয়ার জন্য। সেই আর্জি মেনে তল্লাশি চালিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ফ্ল্যাটটি খুলে দিয়েছে।
বিভাস দাবি করেছেন, তিনি ধর্মীয় কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। নলহাটিতে একটি ঐহিত্যবাহী ধর্মীয় আশ্রমের শাখা তাঁর দায়িত্বে রয়েছে। যদিও ওই ধর্মীয় আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নলহাটিতে আশ্রম বিভাস অধিকারীর ব্যক্তিগত। এর সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই। এ নিয়ে বিভাস বলেন, ব্যক্তিগত আশ্রম নয়। ধর্মীয় সংস্থার যেমন একাধিক শাখা সংগঠন থাকে ওটি তেমনিই।
বিভাসের নলহাটির আশ্রমে একাধিক হেভিওয়েট নেতাদের যাতায়াত ছিল। তিনি নিজেই আনন্দবাজার অনলাইনের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীর 'ভালো সম্পর্ক' রয়েছে। তিনি নাকি তিন-চারবার তাঁর আশ্রমে এসেছিলেন। এমন কী একবার দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন বিভাস, তখন তাঁকে দেখতে এসেছিলেন কৈলায় বিজয়বর্গীয়। তাঁর সঙ্গে এই সুসম্পর্কের কারণে বিভাসের নাম নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিভাসের যুক্তি, তিনি যদি বিপদে পড়েন তবে বাঁচাতে মাঠে নামতে পারেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ। তখন অন্যরাও সুবিধা পাবে। সেই 'ছক কষেই' তাঁর নাম আনা হয়েছে। বিভাস অধিকারী দাবি করেছেন, তিনি কুন্তল ঘোষ বা গোপাল দলপতি কাউকেই চেনেন না।
জেলবন্দি প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর 'সুসম্পর্ক' থাকার দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, '২০১৫ সালে আশ্রম উদ্বোধনের জন্য আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছিলেন। তার থেকে সবাই ভাবে আমার সঙ্গে নাকি তাঁর সম্পর্ক রয়েছে। এমন কি লেনদেনও হয়েছে।' ২০১৮ সাল থেকে মুকুল রায়ের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ছিল। তবে সেই সম্পর্ক আর নেই। জেরায় কুন্তল দাবি করেছেন, তাপসের মতো বিভাসও এক জন ‘এজেন্ট’। বিভাসের দাবি, 'আমি পাপী হলে শাস্তি পাব। সত্য বলে যদি কিছু থেকে থাকে, তা হলে আমার কিছু হবে না।'