যুযুধান বিজেপি–তৃণমূল। উপলক্ষ, স্বামী বিবেকানন্দর জন্মদিন। নির্বাচন দোরগোড়ায়, তাই মনীষীদের জন্মদিনেও নিজেদের শক্তি জানান দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী ও শাসকদল। কলকাতার রাস্তায় মঙ্গলবার মিছিল শেষে হাজরার সভামঞ্চে উঠে বিজেপি–কে আক্রমণ করতে ভুললেন না তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্মীয় বিভাজন থেকে শুরু করে মূর্তি স্থাপন বা এনআরসি– বিভিন্ন প্রসঙ্গে এদিন বিজেপি–র বিরুদ্ধে মুখ খুললেন যুব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি।
এদিন সকালেই সিমলা স্ট্রিটে স্বামীজির বাসভবনের অনুষ্ঠানে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে বিবেকানন্দর বিশাল মূর্তি স্থাপনের দাবি জানিয়েছিলেন। তিনি জানান যে এর আগে তিনি সংসদে, এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও একই দাবিতে সরব হয়েছেন। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে কোনও পদক্ষেপ এখনও করা হয়নি। বিকেলে হাজরার সভামঞ্চে একই অভিযোগ তুললেন অভিষেক। তিনি এদিন বলেন, ‘গুজরাটে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে। সেটা ভাল ব্যাপার, প্রতিবাদ করছি না। কিন্তু, আমার প্রশ্ন কলকাতার বুকে বা বাংলায় কেন ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে নেতাজি বা বিবেকানন্দের মূর্তি হবে না? সাধারণ মানুষের মনেও এই প্রশ্ন উঠে আসছে বারবার।’
যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে যুব দিবস উপলক্ষে এদিন দক্ষিণ কলকাতা জুড়ে মিছিল করে তৃণমূল। গোলপার্ক থেকে শুরু করে গড়িয়াহাট, ট্র্যাঙ্গুলার পার্ক, রাসবিহারী মোড় হয়ে মিছিল শেষ হয় হাজরা মোড়ে। সেখানে এক ছোট সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করে বলেন, স্বামীজির ছবি সামনে রেখে ২০১৪ সালে প্রচার করেছিল বিজেপি। তার পর বেলুড় মঠকেও ন্যূনতম সম্মান দেয়নি। সেখানে দাঁড়িয়ে সিএএ–র প্রচার করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা গুজরাট নয়। বাংলায় ধর্মে ধর্মে বিভাজন করা যাবে না।’
দলের নির্দেশ পাওয়ার পর মাত্র দু’দিনের মাথায় ঠিক হয় এদিনের মিছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্বতঃস্ফূর্তভাবে সাধারণ মানুষ ও দলীয় কর্মী যেভাবে এদিন স্বামীজির জন্মদিনের পদযাত্রা সফল করে তুলল তা সত্যিই প্রশংসনীয় বলে জানান অভিষেক। তিনি বলেন, ‘একদিনের নোটিশে মিছিল করেছি। মানুষের বিশ্বাস ও স্বতঃস্ফূর্ততার তুলনা করলে অন্য রাজনৈতিক দলের মিছিল ১০–০ গোলে হেরে যাবে।’
অভিষেক এদিন আরও বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়নে স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ মেনেই এদিয়ে গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বামীজির দীক্ষা, শিক্ষা নিয়ে মানবসেবার কাজ করেছেন তিনি। নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলেছিলেন স্বামীজি। কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী সেই কাজই করেছেন। বাড়ির জ্যেষ্ঠ গৃহকর্ত্রীর হাতেই তুলে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড।’