শঙ্কর ঘোষ। শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক। একটা সময় তিনি ছিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের রাজনৈতিক শিষ্য। সেই সময় বামেদের যুব সংগঠনে নেতৃত্ব দিতেন শংকর ঘোষ। হাতে চে গুয়েভারার ট্য়াটু। লাল পতাকা হাতে শংকরকে দেখা যেত শিলিগুড়ির রাস্তায়। বামেদের সেই যুব নেতাই আচমকা চলে গেলেন গেরুয়া শিবিরে। কিন্তু কেন? কেন তিনি বাম ছেড়ে রামের দলে চলে গিয়েছিলেন?
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন তিনি। শংকর ঘোষের দাবি, আদর্শের নাম করে বামেদের ছাত্র-যুব নেতৃত্বকে ব্যবহার করা হয়। হিন্দুদের বিভিন্ন আচার পদ্ধতিকে উপেক্ষা করতে শিখিয়েছে বাম রাজনীতি। সংখ্য়ালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়ার নাম করে সংখ্য়ালঘু মৌলবাদকে বাম রাজনীতি প্রশয় দিয়েছে। সেকারণেই তিনি বিজেপিতে গিয়েছে। অকপটে জানিয়েছেন প্রাক্তন বাম নেতা।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মুখে বার বারই শোনা যায় শংকর ঘোষের নাম। সিপিএম থেকে আসার পরে তরুণ এই নেতা শুভেন্দু অধিকারীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই খবর। আর শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে একাধিক কর্মসূচিতে দেখা যায় শংকরকেও। শংকর জানিয়েছেন, বিধানসভায় আসার পরে শুভেন্দুদাকে পাশে পেয়েছি। শুভেন্দুদা সঙ্গে আছেন।
গত সোমবার বিধানসভায় ছিলেন না শুভেন্দু অধিকারী। সেই সময় বিজেপির পরিষদীয় দলকে নেতৃত্ব দেন শংকর। কেন্দ্রের ওয়াকফ বিলের বিরোধিতায় তৃণমূল যে প্রস্তাব এনেছিল সেটা নিয়েই আলোচনা ছিল। আর সেখানে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তিনি ভাষণ দেন। কীভাবে শাসকদলকে নির্দিষ্ট শব্দ ব্যবহার করে আক্রমণ করতে হয় সেটা রপ্ত করে ফেলেছেন শংকর ঘোষ। শংকর জানিয়েছেন, আমার কাজ হল সরকারকে আয়না দেখানো।
অর্থাৎ সরকারের ভুল ত্রুটি কোথায় কোনটা রয়েছে তা নিয়ে সরকারকে নানা সময় পর্যদুস্ত করেন তিনি।
একটা সময় বাম রাজনীতির সুবাদে শহর শিলিগুড়িতে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন শংকর ঘোষ। এলাকার যুবকদের মধ্য়ে শংকর ঘোষের গ্রহণযোগ্যতা ছিল যথেষ্ট। কেবলমাত্র বাম জমানায় নয়, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেও এলাকায় সিপিএমের যুব সংগঠনকে শক্তিশালী করার পেছনে শংকর ঘোষের ভূমিকা ছিল যথেষ্ট। কিন্তু সেই শংকরই ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে চলে গেলেন বিজেপিতে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র হাত থেকে গেরুয়া পতাকাটা তুলে নিয়েছিলেন শংকর। এরপর রাজনৈতিক গুরুও কার্যত বদল হল শংকরে। অশোক ভট্টাচার্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কমল। কাছে এলেন শুভেন্দু অধিকারী।