আবারও কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। আর, এবার সংঘাতের কারণ - অত্যাধুনিক পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গের ঠাঁই না পাওয়া। এই ঘটনায় খুব স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের শাসকদল তথা সরকার পক্ষের একাংশ। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ, রাজ্য সরকারের উদাসীনতাতেই এহেন একটি সম্ভাবনাময় সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের।
ঘটনা ঠিক কী?
চলতি সপ্তাহেই প্রকাশ্যে আসে, ভারতজুড়ে পর্যটনে জোয়ার আনতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সব মিলিয়ে মোট ৪০টি বিশ্বমানের ‘আইকনিক টুরিস্ট ডেস্টিনেশন’ গড়ে তোলা হবে। যার জন্য মোদী সরকারের তরফে বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ৩,৩০০ কোটি টাকা।
কেন্দ্রের তরফে আরও জানানো হয়, প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ টাকা ধাপে ধাপে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকে দেওয়া হবে। এবং রাজ্য সরকারগুলিকেই এই টাকা খরচ করে প্রকল্প রূপায়ণ এবং পরবর্তীতে তার রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করতে হবে।
ঘটনা হল, সংশ্লিষ্ট যে ৪০টি জায়গাগুলিকে নতুন করে সাজিয়ে তোলার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে একটিরও অবস্থান পশ্চিমবঙ্গে নয়। অথচ, সিকিম, অসম বা বিহারের মতো পড়শি রাজ্যগুলি সেই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে।
রাজনৈতিক কাজিয়া:
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, এই বিষয়টি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তরবঙ্গের অন্যতম মুখপাত্র উদয়ন গুহ।
তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের প্রধান শাসকদল বিজেপি নানাভাবে বাংলাকে হেয় করছে। সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা আটকে দেওয়া হচ্ছে। উদয়নের বার্তা, একই কারণে সংশ্লিষ্ট পর্যটন প্রকল্পেও পশ্চিমবঙ্গকে ঠাঁই দেওয়া হয়নি।
কিন্তু, রাজ্য সরকারের প্রতিনিধির এহেন অভিযোগ মানতে রাজি নয় গেরুয়া শিবির। বরং, বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের তরফে এই ঘটনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপরেই দায় চাপানো হয়েছে।
রাজ্য বিজেপির বক্তব্য, একটি নির্দিষ্ট প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ৪০ পর্যটনকেন্দ্রকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই প্রতিযোগিতায় জয়ী হওয়ার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে চেষ্টাই করেনি!
প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার নিয়ম ঠিক কী ছিল?
উল্লেখ্য, এই বিষয়টি নিয়ে আগেই হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। তিনি জানিয়েছিলেন, বিভিন্ন রাজ্যের কাছে অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রস্তাব চাওয়া হয়েছিল। সেই অনুসারে কেন্দ্রের কাছে ৮০টিরও বেশি আবেদন জমা পড়ে। যার মধ্যে বাছাই করা ৪০টি পর্যটন কেন্দ্রকে বিশ্বমানের পরিকাঠামো-সহ সাজিয়ে তোলার জন্য চিহ্নিত করা হয়।