নবান্ন অভিযানে যাওয়া সাধারণ ছাত্রদের উপর পুলিশের নির্যাতনের প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধ ডেকেছে বিজেপি। এবার প্রশ্ন নবান্ন অভিযান নিয়ে তো নানা কটাক্ষ করেছিল সিপিএম ও কংগ্রেস। এবার বাংলা বনধ নিয়ে তাদের অবস্থান কী!
এদিকে সিপিএম তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। কিন্তু কংগ্রেস এখনও তাদের অবস্থান পুরোপুরিভাবে খোলসা করেনি। কার্যত এই বনধকে সমর্থন বা বিরোধিতা করার ক্ষেত্রে কংগ্রেস যে কিছুটা দ্বিধায় রয়েছে একথা অবশ্য বোঝাই যাচ্ছে।
সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপির ডাকা বনধকে সমর্থন করার কোনও প্রশ্নই নেই। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বামেদের একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। বামেদের গণসংগঠন আদিবাসী অধিকার মঞ্চও পথে নামবে। নার্সদেরও মিছিল রয়েছে। তাছাড়া রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিকভাবে একাধিক কর্মসূচি রয়েছে। আমরা সেই কর্মসূচিতে থাকব।
এমনকী এদিনের ছাত্র সমাজের আন্দোলনকেও এক হাত নিয়েছেন সেলিম। তাঁর প্রশ্ন এই ছাত্র সমাজ কারা? গোটাটাই আরএসএস আর বিজেপি। আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে যখন সার্বিকভাবে সকলের স্বর উঠছে তখন বিষয়টিকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে ছাত্র সমাজের নবান্ন অভিযানকে যত না কটাক্ষ করেছে তৃণমূল তার থেকেও বেশি কটাক্ষ করেছে বামেরা। কার্যত এই কর্মসূচির বিরোধিতায় আদা জল খেয়ে নেমে পড়েছিল বামেরা। এতে তারা রাজনৈতিকভাবে কতটা সুবিধা পেল তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।
এদিকে কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, আমরা বনধ ডাকিনি। যারা ডেকেছে তারা জানে আর মানুষ জানেন। বনধ হবে কি না সেটা মানুষের উপর নির্ভর করবে।
তবে মঙ্গলবার গোটা দিন ধরে বাংলার নজর ছিল নবান্ন অভিযানের দিকে। একেবারে যে সুপারফ্লপ হয়েছে এমনটাও নয়। সেক্ষেত্রে বিরোধী দলের দিক থেকে আরও কোণঠাসা বামেরা। সেক্ষেত্রে বিজেপির হাত ধরে একটা তথাকথিত নিরপেক্ষ শক্তি উঠে আসছে। যাদের সম্পর্কে অনেক সমালোচনা। কিন্তু তবু ও এদিন সাধারণ মানুষ অনেকেই আস্থা রাখলেন তাঁদের প্রতি। এটা তাৎপর্যপূর্ণ। আর বামেরা এবারও বিরাট সুযোগ হাতছাডা় করল।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এবারের লোকসভা নির্বাচনেও বিজেপিকে কোণঠাসা করতে গিয়ে নিজেরা শূন্য় হয়ে গিয়েছে বামেরা। আর তৃণমূলকে আরও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এবারও বিজেপি বিরোধিতায় অনড় থাকতে গিয়ে তৃণমূল বিরোধিতার ঐক্যবদ্ধ সুরে ফাটল ধরাচ্ছে বামেরা।