বিজেপি–র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় তৈরি হওয়া বিতর্কের জল গড়িয়ে গিয়েছে অনেকটাই। এ ব্যাপারে রিপোর্ট চেয়ে আগামী ১৪ ডিসেম্বর রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে তলব করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। তবে ইতিমধ্যে সেই হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাকে চিঠি দিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এবার এই পুরো ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবকে চিঠি দিলেন তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লাকে পাঠানো এই তিনপাতার চিঠিতে তৃণমূলের তরফ থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন কল্যাণ। চিঠিতে স্পষ্ট লেখা আছে, যেভাবে রাজ্যের আমলাদের ওপর চাপ তৈরি করা হচ্ছে সেটা নজিরবিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মুখ্যসচিব ও ডিজি–কে তলবের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক কারণ।
একইসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র হিসেবে চিঠিতে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেছেন, একটি রাজনৈতিক দলের সভাপতি জে পি নড্ডাকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি–সহ সমস্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও কনভয়ে হামলা সংক্রান্ত অভিযোগ তুলে বিজেপি যেভাবে রাজনীতি করছে সেই রাজনীতির অংশ হয়ে দাঁড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কল্যাণের কটাক্ষ, অমিত শাহের চাকরের মতো কাজ করছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে অজয় ভাল্লা যাতে এরকম কাজ আর না করেন, সেই আবেদনও জানিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের চিঠি নিয়ে শুক্রবার বিকেলে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আইন–শৃঙ্খলা রাজ্যের ব্যাপার। এ ব্যাপারে রাজ্য সরকার শুধুমাত্র বিধানসভায় জবাবদিহি করতে বাধ্য। অন্য কারও কাছে এই নিতে বলতে বাধ্য নয় তারা। কোন আইনে একটি নির্দিষ্ট ঘটনার জন্য রাজ্যের আধিকারিকদের কেন্দ্র তলব করেছে তা জানানোর জন্য চ্যালেঞ্জ ছোড়েন তিনি।
একই মত আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্র রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে আদৌ হস্তক্ষেপ করতে পারেন কি পারেন না, এটাই সাংবিধানিক বিষয়। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার কোনও অধিকার কেন্দ্র সরকারের নেই। তবে সংবিধানে এটা বলা আছে যে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে রাজ্যকে সাহায্য করতে পারে কেন্দ্র।’ যদিও এ ব্যাপারে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের মত, ‘আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে কোনও রাজ্যের আমলাদের তলব করতেই পারে কেন্দ্র। এ কথা সংবিধানের ২৫৭ ধারায় বলা আছে।’