বাংলা তথা ভারতের ফ্যাশন ডিজাইনিং দুনিয়ায় ইন্দ্রপতন। ৬৩ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন বিশ্বখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার শর্বরী দত্ত। বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বাসভবন থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল সকাল থেকেই ফোনে সাড়া দেননি শর্বরী। রাত ১২.১৫ নাগাদ দক্ষিণ কলকাতায় ব্রড স্ট্রিটের বাড়ির শৌচাগার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়।
নয়ের দশক থেকে কবি অজিত দত্তর সন্তান শর্বরী ভারতীয় পুরুষের অঙ্গবাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের প্রত্যাবর্তন ঘটান। পাশ্চাত্য প্রভাব ঝেড়ে ফেলে ভারতীয় পরম্পরার পোশাক রচনায় তিনি ছিলেন পথিকৃত।
প্রেসিডেন্সি কলেজের এই প্রাক্তনীর গুণমুগ্ধের তালিকায় দেশ-বিদেশের বিশিষ্টদের ভিড় শর্বরী দত্তকে তিন দশকের বেশি সময় বিশ্ব ফ্যাশন দুনিয়ার অন্যতম জ্যোতিষ্ক হিসেবে তুলে ধরেছিল। সেই তালিকায় রয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, ক্রিকেট তারকা সচিন তেণ্ডুলকর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, শোয়েব আখতার, টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ থেকে শুরু করে হিন্দি ও বাংলা চিত্র জগতের নক্ষত্ররা।
প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরে কলকাতাসবিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনশাস্ত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন শর্বরী। ১৯৯১ সালে কলকাতার ‘দ্য কনক্লেভ’-এ তাঁর প্রদর্শনী তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করলে তাঁর পরিচিতি বৃদ্ধি পায়।
প্রধানত পুরুষের পোশাকে হারিয়ে যাওয়া ভারতীয় মৌলিক নকশা ও সূচিশিল্প ফিরিয়ে এনে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে যুগান্তকারী পরিবর্তনের কাণ্ডারি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিক করেন শর্বরী দত্ত।
তাঁর ডিজাইন করা শেরওয়ানি, আংরাখা, পিরান, বন্ধগলা ও কুর্তা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফ্যাশন দুনিয়ায় ঝড় তোলে। ২০০১ সালে পুরুষদের জন্য বিশেষ সোনার গয়না ডিজাইন করতে শুরুকরেন তিনি। কয়েক বছর আগে দক্ষিণ কলকাতায় নিজের শোরুম ‘শূন্য’-তে নিত্যনতুন সৃষ্টির প্রদর্শনীতে মগ্ন ছিলেন শিল্পী। তাঁর প্রয়াণে বাংলা এবং জাতীয় ফ্যাশন জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল।