কেউ বলেছেন কলকাতা দখলের কথা। কেউ আবার পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ওড়িশা ফেরত চাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আর তা নিয়ে আজ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশিদের তুলোধোনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হুংকার দিয়ে বললেন, পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের কোনও জায়গা দখলের মুরোদ নেই বাংলাদেশের। আর কেউ যদি কলকাতা বা বাংলা দখল করতে আসে, তাহলে রাজ্য সরকার মোটেও চুপচাপ বসে ললিপপ খাবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত অখণ্ড। বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে তাঁর কোনও মাথাব্যথা নেই বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘আপনারা বলছেন যে আপনারা (বাংলা, বিহার, ওড়িশা) দখল করে নেবেন। সেই ক্ষমতা নেই আপনাদের। আর আমরা বসে-বসে ললিপপ খাব নাকি? সেটা মোটেও ভাববেন না। ভারতবর্ষ অখণ্ড। সকলের সঙ্গে অখণ্ড আমরা। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই।’
কলকাতা থেকে বাংলা-ওড়িশা-বিহার দখলের হুমকি
আর মুখ্যমন্ত্রী সেই মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভি-সহ কয়েকজনের উটকো কথার প্রেক্ষিতে। প্রথমে নিজেকে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন সদস্য হিসেবে দাবি করা এক ব্যক্তি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন যে ভারতীয় সেনার থেকে তাঁদের দক্ষতা নাকি অনেক বেশি। তাই চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখল করে নিতে পারেন।
সেই মন্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই রিজভি দাবি করেন, ভারত যদি চট্টগ্রাম দাবি করতে পারে (যদিও ভারত সেই দাবি করেনি), তাহলে নবাব সিরাজদৌল্লার বাংলা, বিহার, ওড়িশাকেও ফেরত চাইবে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশের সেই ক্ষমতাও আছে। তিনি বলেন, 'আমরা আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য আকাশ, পাতাল, ভূমি, জল প্রত্যেকটি জায়গায় আমাদের যে শক্তি, আমাদের যে সশস্ত্র বাহিনীর, আইনসংগত বাহিনীর যে শক্তি, সেই শক্তিও কিন্তু কম নয়।’
সামরিক শক্তিতে ভারতের ধারেকাছেও নেই বাংলাদেশ
রিজভি বা অন্যান্যরা সেই কথা বললেও বাস্তবে সামরিক শক্তির নিরিখে বাংলাদেশের থেকে কয়েক গুণ এগিয়ে আছে ভারত। ২০২৪ সালের গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত বিশ্বের চতুর্থ শক্তিশালী দেশ। আর সেখানে ৩৭ তম স্থানে আছে বাংলাদেশ। যে কোনও মাপকাঠিতে বাংলাদেশের থেকে অনেক গুণ এগিয়ে আছে।
আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা সম্ভবত সেটাই মনে করিয়ে দিলেন। সঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন যে রাজনীতির দিক থেকে ভারতের বিভিন্ন দলের মধ্যে বিভেদ থাকলেও কেউ যখন দেশের দিকে চোখ তুলে তাকাবে, তখন সবাই একসঙ্গে লড়াই করবে। সেটার ফল যে ভালো হবে না, সেটাও যেন বুঝিয়ে দিলেন।