চাকরি করার স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় চোরাপথে এসেছিলেন যুবক। তবে শেষরক্ষা হল না। চাকরির স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল ওই যুবকের। পকেটের টাকা ফুরিয়ে যাওয়ায়, বাধ্য হয়েই আত্মসমর্পণ করতে হল লালবাজারে। ঠাঁই জুটল গরাদের পিছনে।
বাংলাদেশ থেকে এসে লালবাজারের পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হতে হল ওই যুবককে। তবে জানা গিয়েছে, তিনি নিজেই সটান উপস্থিত হন লালবাজারে।
শুক্রবার সকালে আচমকাই লালবাজারের গেটে হাজির হন এক যুবক। লালবাজারের গেটে তখন উপস্থিত ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। তাঁদের কাছে ভেতরে ঢোকার আবেদন জানান ওই যুবক। স্বাভাবিকভাবেই কেন তিনি ভিতরে প্রবেশ করতে চাইছেন, তা জানতে চান উপস্থিত পুলিশকর্মীরা। এর পরেই ঘটে বিপত্তি। আচমকা পুলিশকর্মীদের সামনেই তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেওয়ার অনুনয়-বিনয় করতে শুরু করেন ওই যুবক। প্রথমে কিছুটা হতবাক হয়ে যান পুলিশকর্মীরা। পরে তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পুলিশকর্মীরা বুঝতে পারেন, ওই যুবক আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা। শুধু তাই নয়, অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে তিনি কলকাতায় পৌঁছে গেলেও পকেটের রেস্ত ফুরিয়ে যাওয়ায়, তিনি লালবাজারের দ্বারস্থ হয়েছেন।
তবে আর দেশে ফিরতে পারবেন কি না সেটা সময় বলবে। আপাতত ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে লালবাজারের পুলিশ। বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশ করার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই যুবককে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৩ বছর বয়সী ওই যুবক নিজের নাম রুবেল বলেই জানিয়েছেন তাদের।
জেরায় পুলিশকে ওই যুবক আরও জানিয়েছে, মাস দেড়েক ধরে কোনও বৈধ নথিপত্র ছাড়াই কলকাতা ও তার সংলগ্ন এলাকায় ঘুরে বেড়িয়েছেন বাংলাদেশের ঢাকার বাসিন্দা ওই যুবক। পুলিশকে সে আরও জানিয়েছে, ঢাকাতেই পড়াশুনা শেষ করেছে সে। এরপর যুবকের দাবি,পড়াশুনা শেষ করলেও ওই দেশে কোনও চাকরি পাননি রুবেল। তা না—পেয়ে অবশেষে কয়েকজন বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করেন, যেভাবেই হোক সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতায় ঢুকবেন তাঁরা। সেই পরিকল্পনা মতোই দালালের মাধ্যমে রুবেল ও তার কয়েকজন বন্ধু সীমান্ত পেরিয়ে কলকাতায় পৌঁছতে সক্ষম হন।
রুবেলের দাবি, কিছুদিন পরেই তার সঙ্গে আসা বন্ধুদের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। প্রথমে তারা একটি হোটেলে উঠলেও হাতের টাকা ফুরিয়ে আসতে শুরু করে। এরপরই কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও কোনও চাকরি জোগাড় করতে পারেননি তারা। অবশ্য চাকরি জোগাড়ের জন্য নিজেদের বাংলাদেশি পরিচয় গোপন রাখেন ওই যুবকেরা। শেষ পর্যন্ত লাভের লাভ কিছুই হয়নি। পকেটে টান পড়ায়, অবশেষে অসহায় হয়ে কার্যত লালবাজারে আত্মসমর্পণ করতে হয় রুবেলকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।