ব্রেন ডেথ হওয়া রোগীর হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুস প্রতিস্থাপিত হয়েছে বছর আঠারোর এক তরুণের শরীরে। মঙ্গলবার হাসপাতাল এই দুটি অঙ্গ প্রতিস্থাপন সম্পূর্ণ হয়েছে। একই রোগীর শরীরে একসঙ্গে দুটি অঙ্গ প্রতিস্থাপন ছিল পূর্ব ভারতে এই প্রথম। এই প্রতিস্থাপন সফল হলে নজির গড়বে এসএসকেএম হাসপাতাল। তবে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর গ্রহীতার শারীরিক অবস্থা এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জানালেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: একই রোগীর শরীরে একসঙ্গে মৃতের দুটি অঙ্গ প্রতিস্থাপন, নজির গড়তে চলেছে এসএসকেএম
জানা গিয়েছে, অস্ত্রোপচারের পর তরুণের শারীরিক উন্নতি যেমন হয়নি, তেমনি অবনতিও হয়নি। অবস্থা এখন স্থিতিশীল রয়েছে। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এখনও হাইরিক্স পিরিয়ডে ভেন্টিলেশনে রয়েছেন ওই তরুণ। ফলে ৭২ ঘণ্টার আগে কোনও কিছু বলা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। ওই তরুণের হৃৎপিণ্ড এবং ফুসফুসের সমস্যা ছিল জন্মগত। তাছাড়া, তাঁর কিডনি ও লিভারের অবস্থাও পুরো স্বাভাবিক নয়। তাছাড়া, প্রতিস্থাপনের পরে ওই তরুণের ফুসফুসীয় ধমনীর রক্তচাপ বেড়েছে। তবে সঙ্কটে থাকলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এখন স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন ওই তরুণ।
প্রসঙ্গত, বছর ৫২- এর প্রৌঢ়া অরুণ কুলের ব্রেন ডেথ হওয়ার পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা মরণোত্তর অঙ্গ দানের সিদ্ধান্ত নেন।প্রৌঢ়ার আরও অঙ্গ যেমন কিডনি পাচ্ছেন পিজিতে চিকিৎসাধীন ২৪ বছরের এক তরুণী এবং আলিপুর সেনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩২ বছরের এক যুবতী। অন্যদিকে, যকৃৎ পাচ্ছেন পিজি হাসপাতালেই ভর্তি থাকা এক প্রৌঢ়া।
পেশায় চাষি অরুণ গত ১০ মে একটি বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন। বিয়ে বাড়িতে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা পারাপার করার সময় একটি স্কুটি এসে সজোরে তাঁকে ধাক্কা মারে। এরপর তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় এম আর বাঙুর হাসপাতালে। পড়ে সিটি স্ক্যানের পর তাঁকে পাঠানো হয় বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সে। তবে তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ট্রমা কেয়ারে ভরতি করা হয়।
১১ মে তাঁর মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার হয়েছিল। কিন্তু, তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সোমবার সকালে তাঁর ব্রেন ডেথ ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তারপরে চিকিৎসকেরাই ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের অঙ্গদানের বিষয়ে উৎসাহ করেন।