এবার রাজ্যের পূর্তমন্ত্রীর নাম ভাঁড়িয়ে ফেসবুক ও অন্যান্য সোশ্যাল সাইটে যুবতীদের মডেলিং ও অভিনয়ের সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণার ছক কষা হল। মন্ত্রীর ভাই স্বরূপ বিশ্বাসের ছেলে বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে একাধিক মহিলা ও তরুণী মডেলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে যুবকের বিরুদ্ধে।
এই প্রতারণা চক্রের নেপথ্যে ছিল রঞ্জিত বিশ্বাস ওরফে আকাশ বিশ্বাস নামে এক যুবক। মাস্টারমাইন্ড আকাশ বিশ্বাসকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে টালিগঞ্জ থানার পুলিশ। প্রতারণার ফাঁদে পড়া এক উঠতি অভিনেত্রী তথা মডেল প্রতারকের ছবি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করতেই তা মন্ত্রীর নজরে আসে। তারপরই স্বয়ং মন্ত্রী এফআইআর দায়ের করেন। তারপরই রণজিৎ বিশ্বাস ওরফে আকাশ নামে যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত আকাশ বিশ্বাস সোশ্যাল সাইটে প্রথমে বিভিন্ন তরুণীর সঙ্গে আলাপ জমাত। তারপর তরুণীদের মডেলিংয়ে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে তাঁদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিত। টলিউডের কয়েকজন কলাকুশলী ও ফটোগ্রাফারের সঙ্গে পরিচয় ছিল রিজেন্ট পার্কের ২৭ বাবুরাম ঘোষ রোডের বাসিন্দা রঞ্জিতের। নিজের প্রোফাইলে মডেলদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি দিয়েছিল সে। অভিনয় ও মডেলিংয়ে ইচ্ছুক মেয়েদের প্রলোভিত করতে বিভিন্ন নামে ফেসবুকে আটটি অ্যাকাউন্ট খুলেছিল এই যুবক।
এমনকী রঙিন দুনিয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাবও দিত অভিযুক্ত। নিজেকে কখনও মন্ত্রীর ছেলে, আবার কখনও ভাইপো হিসেবে পরিচয় দিয়েও প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত।
ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতায় এসে মডেলিংয়ে কাজ শুরু করা এক মডেল তথা অভিনেত্রীর সঙ্গে কিছুদিন আগে ফেসবুকে আকাশ বিশ্বাসের পরিচয় হয়। কাজ পাইয়ে দেবে বলে তাঁর কাছে ১০ হাজার টাকা চায় আকাশ ওরফে রঞ্জিত। কিন্তু কাজ না পেয়ে মেয়েটি টাকা ফেরত চায়। আকাশ টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করলে বিবাদের সূত্রপাত হয়। ফেসবুকে অভিযুক্তের মোট ৮টি প্রোফাইল শনাক্ত করেছেন গোয়েন্দারা। টালিগঞ্জ থানার পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত করছে লালবাজার সাইবার সেলও।
হোয়াটসঅ্যাপে তিন যুবতীর মডেলিংয়ের নানান ভঙ্গির ছবি দিয়ে তাঁদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের সে ইঙ্গিত দেয় বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে দাবি করে, 'এই তিনটি মেয়ে কাজের আগেই ব্যক্তিগত ভাবে আমার ঘনিষ্ঠ হয়েছিল। চাইলে তাঁদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারে বলেও অশালীন ভাষায় হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে সে জানায়।
ওই অভিনেত্রীকে মেসেজে সে বলে, ‘আমি তো চাইলে তোমার সঙ্গেও এনজয় করতে পারি।’
মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে ভুয়ো প্রতারণা চক্রের নেপথ্যে আর কেউ জড়িত কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। টলিউডের ওই উঠতি অভিনেত্রী ফেসবুকে লেখেন, ‘মানসিকভাবে অত্যাচারিত হওয়ার জন্য দায়ী কিছু কথাবার্তা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। আমার এই পোষ্ট অন্তত কিছু মানুষকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি/প্রতারণার হাত থেকে রেহাই দেবে বলে আমার মনে হয়।’