আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এবং এই ঘটনায় নিগৃহীতার জন্য সুবিচার চেয়ে কলকাতা-তথা বাংলাজুড়ে লক্ষ লক্ষ মহিলা যে রাত দখলের কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন, তাকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের মালদা জেলা সংগঠনের সভানেত্রী সাগরিকা সরকার। তাঁর দাবি, 'মহিলাদের ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামিয়েছে বাম ও বিজেপি'। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়েও শালীনতার মাত্রা ছাড়ালেন তিনি।
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকে আয়োজিত একটি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন সাগরিকা। সেই অনুষ্ঠানে দলের মহিলা সদস্যরা যোগদান করেন। তাঁদের উদ্দেশে মঞ্চ থেকে ভাষণ দিতে গিয়েই 'রিক্লেইম দ্য নাইট' বা মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিকে কড়া ভাষায আক্রমণ করেন সাগরিকা।
ওই তৃণমূল নেত্রীর দাবি, তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই বাম ও বিজেপি মহিলাদের ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামাচ্ছে! আর জি করের ঘটনার নিন্দা করলেও মহিলাদের রাত দখলে ঘোরতর আপত্তি জানান সাগরিকা।
তাঁর আরও অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীকে পদচ্যুত করতেই বাম-বিজেপি চক্রান্ত করছে। সেই কারণেই মহিলাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে বলেও বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি। চাঁচাছোলা ভাষায় বিজেপিকে আক্রমণ করতে গিয়ে বিজেপি নেতা-কর্মী, এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও অসুরের সঙ্গে তুলনা করে বসেন সাগরিকা।
উপস্থিত মহিলাদের উদ্দেশে তাঁর দাওয়াই, বাম-বিজেপি যদি তাঁদেরও 'ভুল বোঝাতে আসে', তাহলে তাদের বয়কট করতে হবে। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীর নামে যে বিজেপি নেতা ও কর্মীরা কুৎসা করছেন, কোমর বেঁধে, ঝাঁটা হাতে তাঁদের মোকাবিলা করতে হবে বলেও নিদান দেন সাগরিকা।
স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল নেত্রীর এহেন মন্তব্য নিয়ে জেলার রাজনীতিতে আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়েছে। সিপিএম নেতা সুব্রত দাস বলেন, রাজ্যের সাধারণ মানুষ জেগে উঠেছে। তারাই নীতি-আদর্শহীন তৃণমূল কংগ্রেসের সরকারকে ঝেঁটিয়ে বিদেয় করবে।
কংগ্রেস নেতা আবদুস শোভনের বক্তব্য হল, তৃণমূলের নেতানেত্রীরা শালীনতা বা শিষ্টাচারের ধার ধারেন না। তাই, মানুষ এখন এঁদের জুতো পেটা করছে। আগামী দিনে মানুষ এঁদের সঙ্গে কী করবে, সেটাই দেখার।
বিজেপি নেতা অজয় গঙ্গোপাধ্যায় আরও কঠোর ভাষায় বলেন, টালা থানার ওসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর কালীঘাটের পিসির পালা! সেই কারণেই তৃণমূলের নেতানেত্রীরা ভাট বকছেন। এতে আমাদের কিছু বলার নেই। যা বলার মানুষই বলবে।