আমেরিকা থেকে অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের হাতে পায়ে শিকল বেঁধে প্রত্যর্পণ নিয়ে বিধানসভায় মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে বিধানসভায় 'প্রশ্নবাণ' তাক করেন কেন্দ্রের মোদী সরকারের দিকে। ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? দেখা যাক।
রাজ্যপালের ভাষণের জবাবে মঙ্গলবার বিধানসভায় বক্তৃতা দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিবাসীদের প্রত্যর্পণ নিয়ে বলেন, ‘আমরাও তো প্রশ্ন করতে পারি, যারা এল, তাঁদের শিকল বেঁধে নিয়ে আসা হল কেন? কী উত্তর আপনাদের? বলে দিচ্ছেন ওটা ওদের প্রোটোকল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনাকে সম্মান জানিয়ে বলছি, আপনি যেদিন প্রেসেন্ট ছিলেন সেদিনও কিন্তু তাঁদের নিয়ে আসা হয়েছে এভাবে।.. মানবিকতা তো সবার মধ্যে.. কিন্তু আপনি কি একবারও প্রতিবাদ করেছিলেন?’ উল্লেখ্য, সদ্য মোদীর মার্কিন সফরের সময় দ্বিতীয় দফায় আমেরিকা থেকে ভারতীয় অভিবাসীদের প্রত্যর্পণ করা হয়। সেই প্রসঙ্গ তুলে বিধানসভায় প্রশ্নবাণ তাক করেন মমতা। এরই সঙ্গে মমতা বলেন,' আজ যদি আপনারা দায়িত্ব নিতেন, তাহলে তাঁরা সম্মানের সঙ্গে ফিরতে পারত। সেই দায়িত্ব আপনারা নেননি। পায়ে শিকল বেঁধে, হাতে শিকল বেঁধে ৪০ ঘণ্টা ঘুরিয়ে.. শিশু থেকে মহিলা কেউ বাদ যাননি, তা সত্ত্বেও আমরা তো কিছু বলিনি। আজ বলছি, কারণ আপনারা বাধ্য করছেন বলবার জন্য।'.. তিনি বলেন,'দেশের স্বার্থ বিঘ্নিত করতে চাই না। তাই অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কেন্দ্র যা করবে তাই মেনে নেব। বাংলা তাতেই ভালো থাকে।'
শুভেন্দুকে জবাব মমতার:-
এদিকে, বিধানসভার ভাষণে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতেও বক্তব্য রাখেন। মমতা বলেন,' বক্তৃতা করার অর্থ কাউকে আঘাত করা, ঘৃণা ভাষণ দেওয়া, সাম্প্রদায়িক উস্কানি, অশান্তিতে ইন্ধন জোগানো নয়। বিধানসভায় অনেক জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, যাঁরা কেউ হিন্দু, কেউ মুসলিম, কেউ খ্রিস্টান, কেউ শিখ, কেউ আদিবাসী, কেউ তফসিলি, কেউ রাজবংশী। মানুষ সকলকে নির্বাচিত করে পাঠিয়েছেন। এমন কী হল যে একাট ধর্মকে বিক্রি করে খাচ্ছেন আপনারা?' এরপর মমতা বলেন,'আমি না কি হিন্দুধর্মকে তাচ্ছিল্য করি, মুসলিম লিগ করি? এ জীবনে আমাকে এসবও শুনতে হবে! জম্মু ও কাশ্মীর, বাংলাদেশের জঙ্গিদের সঙ্গে না কি সম্পর্ক আমার। প্রমাণ করতে পারলে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেব।' বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি বার্তা দিয়ে মমতা বলেন,' আমাকে জঙ্গিনেতা বলেছেন। আপনি বিরোধী দলনেতা হিসেবে একথা বলতে পারেন কি না, চিঠি লিখব প্রধানমন্ত্রীকে।'