লাগাতার বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায় বিপর্যস্ত জনজীবন। শুধু যে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াল রূপই বিপদ বাড়াচ্ছে, তা নয়। সঙ্গে নৌকাডুবি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। উল্লেখ্য, সদ্য নৌকাডুবি ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃতদের পরিবারকে সাহায্য তুলে দেওয়ার ঘোষণা আগেই করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর রবিবার ছিল শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠক। সেখানে এই মৃতদের পরিবারকে সেই সাহায্যের অর্থ তুলে দেন মমতা। সেখানেই দেখা যায় এক অন্য রকমের দৃশ্য।
চলছিল প্রশাসনিক বৈঠক। সেখানে নৌকাডুবি, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে দিচ্ছিলেন সরকারি সাহায্যের অর্থ। মুখ্যমন্ত্রী যখন এই অর্থ স্বজনহারাদের তুলে দিচ্ছিলেন, তখনই এক পরিবারের সদস্য কেঁদে ফেলেন। কাঁধে হাত রাখেন দিদি। আবেগঘন সেই মহিলার পিছনেই দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর এক আপনজন। সেই ব্যক্তির গায়ের উর্ধ্বাঙ্গে জড়ানো ছিল গামছা। সেটি দেখা মাত্রই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিজ্ঞাসা করেন, ‘ চাদর লাগবে? ঠান্ডা লাগছে না?’ ব্যক্তি ঘাড় নেড়ে জবাব দেন, যে ঠান্ডা লাগছে না। তবে এরপরও মমতা খানিকক্ষণ চুপ থাকেন। পরে তিনি প্রশাসনিক বৈঠক থেকে একজনকে ডেকে নিয়ে, বলেন, ‘গাড়িতে চাদরটা আছে না?’ বলার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ব্যক্তি উদ্যত হন। পরে সেই চাদর পরিয়ে দেওয়া হয় ওই স্বজনহারাকে। তৃণমূলের এক ফ্যানক্লাবের তরফে এই গোটা পর্বের ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে, উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠক নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকেও একটি পোস্ট করেন। সেখানে লেখা ছিল,' সর্বপ্রথম গজলডোবায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যে চারজন এবং ভুতনিতেও নৌকাডুবি হয়ে যে দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের সকলের বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি। এই হৃদয় বিদারক ঘটনায় আমি মর্মাহত। তাই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁদের পরিবারের একজনের হাতে পাঁচ লক্ষ টাকার ও অন্যজনের হাতে তিন লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলাম এবং নৌকাডুবি হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের পরিবারকেও দুই লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।' এই বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সাফ বার্তা, ‘একদিকে পুজো অন্যদিকে বন্যার ফাঁড়া। প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের পাশে থাকতে হবে।’