নবান্নের সভাঘরের খুব কাছে ছিলেন তখন চিকিৎসকরা। সভাঘরের ভিতরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মিডিয়ার ক্যামেরায় গোটা বাংলা তখন টানটান উত্তেজনা নিয়ে টিভির পর্দায় দেখেছে গোটা পর্বটি। আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গর্জে ওঠা জুনিয়ার চিকিৎসকের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এদিন বৈঠকে বসার কথা ছিল রাজ্যের। চিকিৎসকরা দাবি করেন লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে গোটা বৈঠকের। তাতে সায় দেয়নি নবান্ন। এরপর ২ ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করার পর মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, তিনি এই বৈঠকের জন্য ২ ঘণ্টা পাঁচ-দশ মিনিট অপেক্ষা করেছেন। এই সময় তিনি কোনও ফোনও ব্যবহার করেননি। জুনিয়র ডাক্তারদের ‘ছোট ভাইবোন’ সম্বোধন করে তিনি বলেন, আশা করি 'ওঁদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।' মমতা করজোরে বলেন,'বাংলার মানুষের আবেগের কাছে বলব, আমি ক্ষমা চাইছি...আপনারা আশা করেছিলেন যাতে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে…।' রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন,' নবান্নের গেট থেকেও যাঁরা এলেন না, তাঁদের ক্ষমা করলাম... আমি সাধ্যমত চেষ্টা করলাম। তাঁদের কাছে আমার আবেদন থাকবে কাজে যোগদান করুন। ' তাঁর দাবি, নবান্নে আসা চিকিৎসক প্রতিনিধি দলের কাছে বাইরে থেকে নির্দেশ আসছিল।
মমতা বলেন, ‘ আমরা প্রথম দিন থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছি, উই ট্রায়েড আওয়ার বেস্ট।’ হাত জোর করে ক্যামেরার সামনে মমতা বলেন,' এরপর আশা করি জনগণ আমায় ক্ষমা করবেন।' মমতা বলতে থাকেন,' আমাদের নামে অনেক.. আমাকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে। আমাদের সরকারকে অনেক অসম্মান করা হয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে অনেক ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। অনেক কুৎসা অপপ্রচার হয়েছে। যাঁরা সাধারণ মানুষ জানতেন না যে এরমধ্যে একটা কালার আছে। মানুষ এসেছিলেন বিচার চাইতে তিলোত্তমার..।' মমতা বলেন, আমি চাই তিলোত্তমা বিচারপাক, সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাক।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরেই এই বৈঠক ঘিরে বেশ কিছু সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। শেষমেশ এদিন চিকিৎসকরা তাঁদের ৫ দফা দাবি নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করতে রাজি হন। এই বৈঠক ঘিরে নবান্নে কড়া নিরাপত্তা ছিল। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও নবান্ন সভাঘরে অপেক্ষা করেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। মুখ্য সচিবকেও আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়। তবে শেষমেশ ভেস্তে যায় বৈঠক। তারপর মুখ খোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।