রাজ্যজুড়ে দ্রোহের আবহে এবার পুলিশ কর্মীদের একাংশও সামিল হচ্ছেন ভার্চুয়াল প্রতিবাদে। আর জি কর কাণ্ডে টালা থানার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক (ওসি) অভিজিৎ মণ্ডল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হতেই নিজেদের ফেসবুক ও হোয়াট্সঅ্যাপের ডিপি (প্রোফাইল পিকচার) কালো করে মৌন প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পুলিশের বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মী-আধিকারিকদের একাংশ।
আর জি করে তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে তিনজনকে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। এই ঘটনার পরই ফেসবুকে এই গ্রেফতারির প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন বিশ্বক মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি। তাঁর ফেসবুক প্রোফাইল বলছে, তিনি কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন সদস্য।
অভিজিতের গ্রেফতারির প্রতিবাদে এবং তাঁর প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতে অন্তত একদিনের জন্য পুলিশকর্মী ও সমভাবাপন্নদের ডিপি কালো করার আহ্বান জানিয়েছিলেন বিশ্বক। তাঁর সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই পুলিশকর্মীদের একাংশ ফেসবুকে নিজেদের প্রোফাইল পিকচার সম্পূর্ণ কালো করে দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ আবার নিজেদের হোয়াট্সঅ্যাপের প্রোফাইল পিকচারও কালো করেছেন।
এই প্রতিবাদীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও। এক্ষেত্রে বিশ্বক মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী সুমনা মুখোপাধ্যায়ের উল্লেখ করা যেতে পারে। স্বামীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে সুমনাও তাঁর ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার কালো করে দিয়েছেন। একই পথে হেঁটেছেন অন্যান্য প্রতিবাদী পুলিশকর্মীর পরিবারের এক বা একাধিক সদস্যও।
প্রসঙ্গত, আর জি কর কাণ্ডে টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। যেগুলো অত্যন্ত গুরুতরও বটে। যার জেরে তাঁকে গ্রেফতার পর্যন্ত হতে হয়েছে।
কিন্তু, এই দুঃসময়েও অভিজিতের পাশে থেকেছেন তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা মণ্ডল। সোমবার তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে যান কলকাতা পুলিশের কর্তাব্যক্তিরা। বুঝিয়ে দেন, তাঁরা অভিজিৎ মণ্ডলের পাশে আছেন।
সঙ্গীতারও দাবি, আর জি কর কাণ্ডে নির্যাতিতা যাতে সঠিক বিচার পান, তা নিশ্চিত করতে তাঁর স্বামী দিন-রাত এক করে পরিশ্রম করছিলেন। এমনকী, কাজের চাপে বাড়িও আসতে পারছিলেন না তিনি।
সঙ্গীতা আরও জানিয়েছেন, তাঁদেরও দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। তাই নির্যাতিতার বাবা-মায়ের যন্ত্রণা তাঁরা যথার্থভাবেই অনুভব করতে পারছেন। আর জি কর কাণ্ডে তাঁর স্বামী যে কর্তব্য পালনে কোনও গাফিলতি করেননি, সেই বার্তা স্পষ্টভাবেই দিয়েছেন তিনি। যদিও সিবিআই গোয়েন্দারা আপাতত তা মানতে নারাজ। এমনকী, তাঁরা সঙ্গীতাকেও ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।
অন্যদিকে, অভিজিতের গ্রেফতারির প্রতিবাদে বিশ্বক মুখোপাধ্যায় ডিপি কালো করার যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, সেই পোস্টে সমর্থনসূচক মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে কলকাতার ১০৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর নন্দিতা রায়কে। যার জেরে পরে নিজের মন্তব্য মুছে ফেলতে হয় তাঁকে।