আরজি কর-এ তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় শনিবার রাতেই গ্রেফতার হয়েছেন টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। এদিন তাঁকে শিয়ালদা কোর্টে তোলা হয়। তাঁকে নিয়ে কোর্টে সিবিআই বলেছে, অভিজিৎকে এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে দেখা হচ্ছে না, তবে তাঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাট ও প্রক্রিয়ায় দেরি করার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিন সওয়াল জবাব পর্বে, সিবিআইয়ের আইনজীবীর তরফে দাবি করা হয় যে, ঘটনার দিন সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের মধ্যে কথা হয়েছিল ফোনে। বিস্ফোরক এই ইঙ্গিতে সিবিআই ঘটনার নেপথ্যে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে, বলে ইঙ্গিত দিয়েছে কোর্টে।
এদিন শিয়ালদা কোর্টে দুপুর দুটো নাগাদ সওয়াল জবাব পর্ব শুরু হয়। তখন থেকেই জল্পনা ছিল যে, সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে সম্ভবত ৩ দিনের হেফাজতে চাইতে পারে সিবিআই। এদিন শুনানি শেষে শিয়ালদা কোর্ট, সিবিআইয়ের আবেদনের পর ওই দুজনের ৩ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। এদিকে, সওয়াল-জবাব পর্ব চলাকালীন সিবিআইয়ের তরফে আইনজীবী বলেন, অনেকে বলছে, পুলিশ আর সিবিআইয়ের মধ্যে টানাটানি চলছে, তবে ব্যাপারটা এরকম নয়, ‘আমরা সত্যিটা জানতে চাইছি’।
সিবিআইয়ের দাবি, ঘটনার দিন সকাল ১০ টায় টালা থানার ওসি আরজি কররে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর পান, কিন্তু এফআইআর হওয়ায় তথ্য প্রমাণ লোপাটের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। সিবিআই কোর্টে দাবি করে, সন্দীপ ওই কলেজের মাথায় ছিলেন, ওঁরা ঠিকভাবে প্রক্রিয়া অনুসরণ করেননি। উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ডে দুর্নীতির অভিযোগে, এর আগে, কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআই। সদ্য তাঁকে, আরজি কর-এ তরুণী চিকিৎসকের হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআই কোর্টে দাবি করেছে, টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল ও আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের মধ্যে ফোনে কথপকথোন হয়েছিল, বলে। দেহ উদ্ধারের পর তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল বলে দাবি করা হয়। সিবিআই বলছে, ‘সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডলের মধ্যে যোগসূত্র থাকতে পারে। বৃহত্তর ষড়যন্ত্র থাকতে পারে।’ বিষয়টি সিবিআই খতিয়ে দেখবে বলে আদালতে জানানো হয়েছে।
এদিকে, অভিজিৎ আদালতে বলেন, '…আমি অভিযুক্ত না সাক্ষী সেটা আমাকে জানানো হয়নি। আমার শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়েছিলাম। বিভিন্ন নথিও দিয়েছিলাম।’ তিনি জানান, তাঁকে মোট ৬ বার নোটিস পাঠানো হয়, শেষবারের নোটিসটি ছিল ১৪ তারিখের। তাঁর আইনজীবীর সওয়াল, তাঁর মক্কেলের অ্যারেস্ট মেমো নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, সেখানে মক্কেলের স্ত্রী বা আত্মীয়ের কোনও স্বাক্ষর নেই। কিসের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হচ্ছে, তা-ও দেখানো হয়নি, বলে অভিজিতের আইনজীবী দাবি করেন।