আবারও তৃণমূল নেতৃত্বের নিশানায় রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তাঁর বিরুদ্ধে বারংবার সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে অবিলম্বে তাঁর অপসারণের দাবি তুলে সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ সাগরিকা ঘোষ।
বুধবার এই প্রসঙ্গে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন সাগরিকা। সঙ্গে একটি ভিডিয়ো বার্তাও দেন তিনি। যার মোদ্দা কথা হল, বিজেপির দালাল হিসাবে কাজ করতে গিয়ে নিজের সাংবিধানিক দায়-দায়িত্ব ভুলে গিয়েছেন রাজ্যপাল। উলটে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছেন তিনি। তাই অবিলম্বে রাজ্যপালের পদ থেকে সি ভি আনন্দ বোসকে অপসারিত করা দরকার।
প্রসঙ্গত, আর জি কর আন্দোলনের আবহে সম্প্রতি আবারও রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাজ্যপাল। সরাসরি আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনকী, সামাজিকভাবে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন বাংলার সাংবিধানিক প্রধান! যা কার্যত নজিরবিহীন বলেই দাবি ওয়াকিবহাল মহলের।
সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি ভিডিয়ো বার্তা পোস্ট করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তাতে তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে জানান, আর জি কর কাণ্ডের জেরে রাজ্যজুড়ে যে দ্রোহের আবহ তৈরি হয়েছে, সেই বাস্তব পরিস্থিতি থেকে তিনি মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারবেন না।
ওই একই ভিডিয়ো বার্তায় আন্দোলনকারী তথা বাংলার আমজনতার পাশে দাঁড়িয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক বয়কট করবেন বলে জানিয়ে দেন বোস! তাঁর সিদ্ধান্ত, এবার থেকে আর কোনও অনুষ্ঠান বা উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করবেন না তিনি। এমনকী, কোনও সরকারি অনুষ্ঠানে যদি মুখ্যমন্ত্রী যুক্ত থাকেন, তাহলে তিনি সেই অনুষ্ঠানও বয়কট করবেন!
রাজ্যপালের এমন অবস্থান ও বক্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই চটেছে শাসকশিবির। তারা পালটা আক্রমণ করেছে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে। সাগরিকা বুধবার যে ভিডিয়ো বার্তা দিয়েছেন, তাঁর সেই বক্তব্যও তৃণমূল কংগ্রেসের পালটা আক্রমণের রণকৌশলের অঙ্গ বলেই মনে করা হচ্ছে।
সাগরিকা বলেন, এই রাজ্যপালের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। একজন নয়, দু'জন মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে একজন আবার রাজভবনেরই কর্মী।
সাগরিকার যুক্তি, রাজ্যপালের মতো সাংবিধানিক পদে থেকে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচিত প্রধান তথা একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীকে এমন একজন আক্রমণ করছেন, যাঁর নিজের বিরুদ্ধেই নারী নিগ্রহের গুরুতর অভিযোগ রয়েছে!
তৃণমূল সাংসদের সরাসরি অভিযোগ, বিজেপির দালাল হিসাবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই বারবার এমন আচরণ করছেন রাজ্যপাল। তাই, অবিলম্বে রাজ্যপালের কুর্সি থেকে সি ভি আনন্দ বোসকে অপসারিত করার দাবি তুলেছেন সাগরিকা।