স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর 'হামলার ছক কষা', 'অতি বামপন্থী' সঞ্জীব দাসের 'গড ফাদার' জেলবন্দি তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়! বিধাননগরের পুলিশের হাতে ধৃত সঞ্জীব দাসের ফেসবুক প্রোফাইল ঘেঁটে রীতিমতো 'প্রমাণ-সহ' এই দাবি উত্থাপন করে বিস্ময় প্রকাশ করলেন সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষ।
তাঁর মতে, পুরোটাই আষাঢ়ে গল্প! আসলে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর নজরদারি চালাতেই নাকি তাঁদের উপর হামলা হতে পারে বলে গল্প ফেঁদেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এবং পরিকল্পনা মাফিক সেই গল্প সর্বসমক্ষে উপস্থাপিত করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
বস্তুত, কুণাল ঘোষই প্রথম একটি অডিয়ো রেকর্ডিং প্রকাশ্যে আনেন। তাতে ছিল দুই ব্যক্তির কথপোকথন। সেই 'প্রমাণ' সামনে রেখে কুণাল দাবি করেন, রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বামেরা স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানরত জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর হামলার ছক কষছে! যার ভিত্তিতে পরবর্তীতে প্রথমে সঞ্জীব দাস নামে উপরোক্ত যুবক এবং পরে বাম নেতা কলতান দাশগুপ্তকে গ্রেফতার করা হয়।
এবার এই সঞ্জীব দাসের পরিচয় নিয়েই একগুচ্ছ প্রশ্ন তুললেন সিপিএম নেতা শতরূপ। তাঁর অভিযোগ, কুণাল ঘোষের পেশ করা অডিয়ো রেকর্ডিং আদতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফসল। এখনকার প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে যা নির্মাণ করা খুবই সহজ।
এরই পাশাপাশি, ধৃত সঞ্জীব দাসের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বরের একটি পোস্ট সর্বসমক্ষে তুলে ধরেন শতরূপ। তাতে জেলবন্দি তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ছবি পোস্ট করে 'অতি বামপন্থী' সঞ্জীব লিখেছেন, 'মাই গড ফাদার'!
এই ফেসবুক পোস্টের ভিত্তিতেই শতরূপের প্রশ্ন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় কবে থেকে অতি বামপন্থীদের গড ফাদার হচ্ছেন? সিপিএম নেতার ইঙ্গিত, পুরোটাই আসলে রাজ্য সরকার, রাজ্যের শাসকদল আর পুলিশ প্রশাসনের 'গট আপ'! তাঁর ব্যাখ্যা, ধৃত সঞ্জীব মোটেও অতি বামপন্থী নন। তিনি নেহাতই একজন তৃণমূল কর্মী। যাঁকে শিখিয়ে, পড়িয়ে বামপন্থী সাজানো হয়েছে।
এর নেপথ্যে বিশেষ কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছে বাম নেতৃত্ব। শতরূপের মতে, আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দেওয়ার অজুহাতে অবস্থানস্থলে যেসব সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, সেগুলি শব্দও রেকর্ড করতে পারে কিনা, তা দেখা দরকার!
তাঁর আরও অভিযোগ, জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন স্তিমিত ও কালিমালিপ্ত করতেই এই ধরনের কাণ্ড ঘটানো হচ্ছে।