মাঝ সপ্তাহের কাজের দিন। ব্যস্ত শহরের রাস্তা। আর তার মধ্য়েই হাতে রক্তমাখা ছুরি নিয়ে উদ্ভ্রান্তের মতো দ্রুত পায়ে হেঁটে চলেছেন এক ব্যক্তি! এমন দৃশ্য দেখে পথচলতি লোকজন থতমত খেয়ে গেলেও, ওই ব্যক্তির হাতে রক্তমাখা ছুরি দেখে কেউ আর তাঁর কাছে যাওয়ার সাহস পাননি।
মাঝারি উচ্চতা, একেবারে সাদামাটা চেহারার ওই ব্যক্তির পরনের পোশাকও খুবই সাধারণ। পিঠে ব্যাকপ্যাক, হাতে আরও একটি ঝোলা ব্যাগ - এই ধরনের ব্যাগে সাধারণত অফিসযাত্রীরা নিজেদের টিফিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে যান।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে নিউ টাউনের কারিগরি ভবনের সামনে। ওই ব্যক্তিকে এভাবে ছুরি হাতে হাঁটতে দেখে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ তাঁকে নিরস্ত্র করার চেষ্টা করেন। তিনি বারবার অনুরোধ করায় শেষমেশ ওই ব্যক্তি ছুরিটি ফেলে দেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আটক করা হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, পরবর্তীতে টেকনো থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, ধৃত ওই ব্যক্তির নাম অমিত কুমার সরকার। তিনি কারিগরি ভবনেই চাকরি করেন। সূত্রের দাবি, তিনি নাকি অফিসে ছুটির আবেদন করেছিলেন। কিন্তু, ছুটি পাননি। তা নিয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। তাতেই রেগে গিয়ে তাঁদের উপর ছুরি নিয়ে হামলা চালান তিনি। যার ফলে কয়েকজন আহত হন।
এরপর ওই রক্তমাখা ছুরি ও নিজের ব্যাগপত্তর নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ, তাঁর ছুরির কোপে একজন নিরাপত্তারক্ষী ও কয়েকজন পুলিশকর্মীও নাকি আহত হয়েছেন।
এদিকে, এই ঘটনা জানাজানি হতেই কয়েকজন সাংবাদিক ক্যামেরায় ভিডিয়ো রেকর্ডিং করতে করতে ওই ব্যক্তির পিছন পিছন হাঁটতে শুরু করেন। তাঁরা দূর থেকেই ওই ব্যক্তিকে মাথা ঠান্ডা করতে বলেন। ছুরি ফেলে দিতে বলেন। জবাবে, ওই ব্যক্তি তাঁদের কাছে না আসার জন্য হুঁশিয়ারি দেন। সেই ছবি ইতিমধ্য়েই ছড়িয়ে পড়েছে সোশাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমে।
একইসঙ্গে ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন, তাঁর সহকর্মীরাই তাঁর বাবাকে উদ্দেশ করে কোনও অশালীন মন্তব্য করেছেন! তাতে তিনি রেগে গিয়েছেন। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ ও পালটা অভিযোগের কোনও সত্যাসত্যই এখনও পর্যন্ত যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
সূত্রের খবর, পুলিশ ইতিমধ্যেই ধৃত অমিতের সঙ্গে কথা বলে পুরো বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছে। তিনি কেন এত রেগে গেলেন? কোথা থেকে ছুরি জোগাড় করলেন? সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকী, অমিত কোনও কারণে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন কিনা, সেই দিকটাও দেখা হচ্ছে।