শুক্রবার সকালে পুরুলিয়ার মানবাজারের ২ নম্বর ব্লকের পাইঁসাগোড়া জঙ্গলে জাল পাতা হয়েছিল। তবে বনদফতরের সেই চেষ্টাকে ব্যর্থ করে জাল টপকে বাঘিনী জিনাত পালিয়েছে বলে খবর। জানা যাচ্ছে, জেলা বদলে ফেলেছে বাঘিনী জিনাত। এবা বাঘিনীর পা পড়েছে বাঁকুড়ায়। পুরুলিয়ার জঙ্গল ছেড়ে বাঘিনী জিনাতের নয়া ডেরা এবার বাঁকুড়া।
এখনও পর্যন্ত যা খবর, তাতে শনিবার সকালে কুমারী নদী পার করে কাঁসাইয়ের পার ধরে পুরুলিয়ার মানবাজার ১ ব্লকের ধানখাড়া পেরিয়ে সপ্তাহান্তে বাঁকুড়ায় এন্ট্রি নিয়েছে জিনাত। বাঁকুড়ার মুকুটণিপুরের কাছাকাছি সে পৌঁছে যায়, বলে খবর। শুক্রবার রাতে পুরুলিয়ার মানবাজারে জিনাতকে ধরতে জাল পাতা হলেও, রাতে সেই জাল পার করে সে চলে যায়। উল্লেখ্য, জিনাতের গলায় রয়েছে রেডিও কলার। তাই তার গতিবিধি ট্র্যাক করা যাচ্ছে। আর সেখানেই জানা যাচ্ছে, শেষপর্যন্ত মুকুটমণিপুরের জলাধারের আশপাশে বাঘিনী অবস্থান করছে। লোকালয়ে জিনাতকে ঘিরে চরম আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
শুধপ ট্র্যাকারই নয়। ড্রোন ভিশনেও বাঘিনীর গতিবিধিতে নজর রাখছে বনদফতর। স্যাটেলাইট লেকোশন দিয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টা অন্তর অন্তর বাঘিনীর অবস্থান জানা যাচ্ছে। বনদফতরের কর্মীদের সূত্রে খবর, শুক্রবারের রাতে জলাধারের জল এড়িয়ে সন্তর্পণে পা ফেলে এগিয়েছে বাঘিনী। শুক্রবার রাতে সেই স্ট্র্যাটেজিতেই এগিয়েছে বাঘিনী জিনাত।
গত রবিবার, সিমলিপাল জঙ্গল থেকে বাঘিনী জিনাত এসেছিল ঝাড়গ্রামের বে পাহাড়ি এলাকায়। সেখান থেকে ময়ূরঝর্ণা হয়ে বান্দোয়ানে ঢুকে পড়ে সে। এরপরই শুরু হয় তৎপরতা। ওড়িশার সিমলিপাল জঙ্গল থেকেও অনেকেই এসেছেন জিনাতকে নিরাপদে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে। তবে জিনাত আপাতত অধরা। এদিকে, বাঘের আতঙ্কে প্রহর কাটছে লোকালয়ের মানুষের। স্বভাবতই শীতের দিনের ছুটিতে মুকুটমণিপুরে রয়েছে পর্যটকদের ভিড়। সেই জায়গা থেকে জিনাতের অবস্থান বদল প্রশাসনের কাছে চ্যালেঞ্জ।
এর আগে, অক্টোবর-নভেম্বরে মহারাষ্ট্রের তাডোবা-অন্ধেরী টাইগার রিজার্ভ থেকে জিনাত ও যমুনা নামের দুটি বাঘিনীকে সিমলিপাল জাইগার রিজার্ভে আনা হয়। জিনাত এরপর ছিল সিমলিপালের নর্থ কোরে। সেখানে ২৪ দিন ছিল। তার গে ১০ দিন ঘোরের মধ্যে রাখা হয়েছিল জিনাতকে। ৯ ডিসেম্বর রাতে জিনাত পালায়। পৌঁছে যায়, ৩৫ কিলোমিটারের দূরের ঝাড়খণ্ডে। খোঁজ মিলছিল না জিনাতের। পরে জানা যায়, জিনাত ঝাড়খণ্ড থেকে ঝাড়গ্রাম, পরে পুরুলিয়ায় গিয়েছে। তৎপর হতে থাকে বনদফতর। পর পর মোষ, ছাগল, শুকোর দিয়ে তার জন্য ফাঁদ পাতা হয়। তবে ফাঁদ এড়িয়ে জিনাত এগিয়ে যায়। আপাতত তাকে নিরাপদে ফেরানোর দিকে তাকিয়ে বনদফতর।