এক্সিট পোলের সব হিসেবকে মিথ্যে প্রমাণিত করে দিয়ে বিপুল জনাদেশ এবার তৃণমূলের সঙ্গে। ঠিক যেন ২০২১ সালের ভোটের পুনরাবৃত্তি। দেখা যাচ্ছে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার ২৮টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২৬টি আসনেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এই যে এত দুর্নীতির অভিযোগ, এতজন জেলে রয়েছেন তারপরেও কার্যত ইভিএম ভরে গিয়েছে ঘাসফুলে। কলকাতা দক্ষিণ, কলকাতা উত্তর, যাদবপুর, দমদম সহ সংলগ্ন বিধানসভা এলাকায় ভালো ফল করেছে তৃণমূল।
তবে এসবের মধ্য়ে কিছু এলাকায় একটু সমস্যা রয়েছে। ২০২১ সালে শ্যামপুকুর থেকে ২২,৫৫০ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন শশী পাঁজা। সেখানে এবার দেখা যাচ্ছে ১৫৯৯ ভোটে পিছিয়ে আছে তৃণমূল।
জোড়াসাঁকো নিয়ে কিছুটা চিন্তা আছে। এখানে বিজেপি বরাবর ভালো ফল করে।
এদিকে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের ফলাফল বিশ্লেষন করলে দেখা যাচ্ছে সবথেকে বড় লিড এসেছে বেলেঘাটা থেকে। মানিকতলাতেও ৩৫৭৫ ভোটের লিড। আগামী কয়েক মাসের মধ্য়ে মানিকতলা উপনির্বাচন হবে। তার আগে এই ব্যবধানও আরও বৃদ্ধি করতে চাইছে তৃণমূল।
দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী এলাকায় তৃণমূল ১৬৯১ ভোটে এগিয়ে রয়েছে। ভবানীপুরে লিড রয়েছে ৮২৯৭ ভোট। কিন্তু ৬৩,৭০, ৭১,৭২, ও ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে রাসবিহারীর এমএলএ দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, কিছু অবাঙালি মানুষ ভেবেছিলেন এটা দিল্লির ভোট। তবে আমরা ফলাফল পর্যালোচনা করব।
যাদবপুরে সাতটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই লিড পেয়েছে তৃণমূল। এমনকী ভাঙরে আইএসএফের বিরুদ্ধে লড়াই করে তৃণমূল ৮২,০০০ ভোট বের করে আনতে পেরেছে। টালিগঞ্জে এগিয়ে আছে ২০,০০০ বেশি ভোটে। বারুইপুর নর্থে ৪৭,০০০-এর বেশি ভোটে এগিয়ে তৃণমূল।
সোনারপুর দক্ষিণে লিড কিছুটা কম। এখানে ১০,০০০ এরও কম লিড রয়েছে। এই জায়গাটা একটু মেরামতির কথা ভাবছে দল। তবে বার বারই বলা হয় শহর কলকাতার মানুষ নাকি একটু প্রতিষ্ঠান বিরোধী। মোদী শেষ বেলায় এই কলকাতায় রোড শো করেছিলেন। এখানে সন্ন্যাসীরা মিছিলও করেছিলেন। কিন্তু ভোটের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে কলকাতা ও সংলগ্ন ২৮টি বিধানসভার মধ্য়ে ২৬টিতেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা এলাকাতেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল। থই খুঁজে পায়নি বিজেপি।
এদিকে ২০২৬ সালের আগে এই ফলাফল বিজেপির কাছে দুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াল। শেষ পর্যন্ত কতটা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বিজেপি সেই প্রশ্নও উঠছে।
তবে কলকাতা দক্ষিণে ৮৪টি ওয়ার্ডের মধ্য়ে ২১টিতে কিছুটা পিছিয়ে আছে তৃণমূল। আবার বনগাঁ পুরসভার সিংহভাগ ওয়ার্ডেই ভরাডুবি তৃণমূলের। গোবরডাঙা পুরসভার ১৭টির মধ্য়ে ১৫টিতে পিছিয়ে তৃণমূল। শহরতলির একাধিক এলাকায় তৃণমূল জিতলেও কিছু জায়গায় তারা পিছিয়ে রয়েছে।